ঠান্ডায় আরাম পেতে আগুনে হাত সেঁকা। রবিবার রাতে সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র
সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় দার্জিলিংকে ছুঁয়ে ফেলার পরে, পুরুলিয়ায় শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা দিয়েছিল হাওয়া অফিস। তা না হলেও জেলায় শীতের দাপট অব্যাহত রয়েছে। গত শুক্রবার মরসুমের শীতলতম দিন কাটানোর পরে, রবিবারও জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দু’অঙ্ক ছুঁতে পারেনি। জেলা কৃষি দফতর জানাচ্ছে, শনিবারে তুলনায় কিছু বেড়ে রবিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জেলা কৃষি দফতরের হিসেব বলছে, গত বুধবার থেকে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রয়েছে ১০ ডিগ্রির নীচেই। এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও দিনভর ঠান্ডা হাওয়ার দাপট ছিল অন্য দিনের মতোই। এক দিকে, যেমন সকাল ৯টা-সাড়ে ৯টার আগে পথেঘাটে লোকজনের তেমন দেখা মিলছে না, তেমনই বিকেলের আগেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে চারপাশ। জেলা বাসমালিক সংগঠনের সম্পাদক প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্তের কথায়, “এত ঠান্ডা যে সকালের দিকে কোনও রুটের বাসেই যাত্রী হচ্ছে না।” একটি বাসের কর্মী পদ্মলোচন মাহাতো জানাচ্ছিলেন, ভোর ৫টায় বাসে উঠতে হয়। এমনই মারাত্মক ঠান্ডা যে হাত জমে যাচ্ছে। দুধের ব্যবসার সুবাদে ফি দিন ভোরে বেরনো তারাপদ গোস্বামীও বলছিলেন, “মোটরবাইক নিয়ে বেরোই। হাতে দস্তানা থাকলেও ঠান্ডায় বাইক চালাতে পারছি না।”
তবে শীত যেন দমাতে পারেনি পিকনিকের দলকে। কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করেই এ দিন জেলার বিভিন্ন পিকনিক স্পটগুলিতে ভিড় দেখা গিয়েছে। আগুনে রান্নার ফাঁকে হাত-পা সেঁকতে দেখা গিয়েছে অনেককে। বাঁকুড়া থেকে কাশীপুরের রঞ্জনডি জলাধারে পিকনিক করতে এসেছিলেন শহরের পোশাক ও বস্ত্র ব্যবসায়ীরা। তাঁদের তরফে পার্থসারথি সেন, কানাই দে, অরূপ দত্তেরা জানালেন, জলাধারের ধারে পিকনিক। দারুণ উপভোগ করেছেন। যদিও ঠান্ডা হাওয়া মাঝেমধ্যে ভেতর পর্যন্ত কাঁপিয়ে দিচ্ছে।
কম-বেশি একই ছবি দেখা গিয়েছে বাঁকুড়াতেও। এ দিন জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ছুটির দিন থাকায় এমনিতেই সকালের দিকে রাস্তাঘাটে লোকজনের ভিড় ছিল কিছু কম। বেলা বাড়ার সঙ্গে যদিও ভিড় বাড়তে শুরু করে। ছুটির দিনে শীতের আমেজ মাখতে অনেকে জেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। বাঁকুড়ার বাসিন্দা অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "প্রবল শীতের দাপটে সকালের দিকে বাইরে বেরনো মুশকিল হচ্ছে। মিঠে রোদের খোঁজে ছাদই ভরসা।” বাঁকুড়ার এক তরুণী নমিতা দাসও বলেন, “সকালের দিকে ঠান্ডায় জলে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। এমন ঠান্ডা অনেক বছর পর দেখা গেল।" ছুটির দিনে শীতের আমেজ বাড়তি পাওনা, জানান পরিবার নিয়ে মুকুটমণিপুরে বেড়াতে যাওয়া বাঁকুড়ার পোয়াবাগানের বাসিন্দা সন্দীপ সেন।