পুরভোটের মুখে ফের সামনে এল অনুব্রত মণ্ডল বনাম স্বপনকান্তি ঘোষ তরজা। শুক্রবার সিউড়িতে দলীয় কর্যালয়ে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে দলের জেলা সভাপতি অনুব্রতকে ‘পাঁঠা’ বলে আক্রমণ করেন তৃণমূলের সাসপেন্ডেট বিধায়ক স্বপনকান্তি। তিনি বলেন, ‘‘বেশ কয়েকদিন ধরে জেলা সভাপতি বিভিন্ন জায়াগায় আমাকে পাগল ছাগল বলছেন। উনি ঠিকই বলেছেন, ‘আমি পাগল, ছাগল’। এত সংযত হয়ে কথা আমি বলতে পারি না। যা মুখে আসে তাই বলি। তবে এটাও ঠিক ছাগলের মধ্যে পাঁঠাটা অনুব্রত মণ্ডল। উনি যা পান লুটেপুটে খান।’’ যদিও স্বপনবাবুর এই মন্তব্যের জবাব দিতে চাননি অনুব্রত। এ দিন বিকেলেই সিউড়িতে পুরভোটের প্রচারের সময় স্বপনবাবুর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া চাইলে অনুব্রতর জবাব, ‘‘উনি তো নিজেই স্বীকার করেছেন, উনি পাগল। তা হলে আর পাগলের বক্তব্যের কী প্রতিক্রিয়া দেব!’’
প্রসঙ্গত, সিউড়ি’র তৃণমূল বিধায়ক (বর্তমানে সাসপেন্ডেট) স্বপনবাবুর সঙ্গে জেলাসভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরোধ নতুন কিছু নয়। সেই বিরোধ চরম আকার নেয় তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে জলপ্রকল্প ও বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ আনার পর থেকেই। ওই একই বিষয়ে দলকে বিপাকে ফেলায় স্বপনঘোষকে দল থেকে সাসপেন্ড করা হলেও বাকযুদ্ধ থামার লক্ষণ নেই। তবে সিউড়ি পুরসভায় জল প্রসঙ্গেই সবচেয়ে অস্বস্তিতে রয়েছে শাসকদল। এ বারের পুরভোটের প্রচারে বিরোধী দলগুলির সবচেয়ে বড় হাতিয়ার এই একটি বিষয়।
অথচ জল প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে যে বিধায়ক নিজের দল পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে এতটা সরব, তিনিই কেন পুরভোটের প্রচারে নিজেকে রাখছেন না? সেটা জানাতেই সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন স্বপনবাবু। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘দল আমাকে সাসপেন্ড করেছে। আমি একে বহিষ্কারের সামিল বলেই মনে করি। যেহেতু আমার রাজনৈতিক অবস্থান এখন কিছু নয়। তাই কার হয়ে প্রচারে যাব। সিপিএম, কংগ্রেস বা বিজেপি’র হয়ে প্রচারে গিয়ে কোনও লাভ নেই। তাই আমি চুপ করে আছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘তবে চুপ করে থাকলেও আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে আমার লড়াই জারি রয়েছে। যতক্ষণ না এর তদন্ত হয় ততক্ষণ আমি থামছি না। আমার রাজনৈতিক অবস্থান কী হবে তা নিয়েও ভাবছি না।’’