Suvendu Adhikari

শনিবার শুভেন্দুর সভা কোটাসুরে, যাবেন না, জানিয়ে দিলেন দুধকুমার, রইল ‘দ্বন্দ্ব-কাঁটা’

গরু পাচার মামলায় জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ধরা পড়া ইস্তক বীরভূমে নিজেদের রাজনৈতিক কর্মসূচি বহুগুণ বাড়িয়েছে বিরোধীরা। সিপিএম যেমন সভা-মিছিল করেছে, পিছিয়ে নেই বিজেপি-ও।

Advertisement

অর্ঘ্য ঘোষ

ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:১৯
Share:

শুভেন্দুর সভাস্থল দেখছেন বিজেপি নেতারা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

বীরভূমে ফের সভা করতে আসছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আজ, শনিবার ময়ূরেশ্বরের কোটাসুর ফুটবল মাঠে জনসভা রয়েছে শুভেন্দুর। মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সদ্যই জেলা সফর করেছেন। তার ঠিক পরে পরেই শুভেন্দু সভা করতে আসায় জেলার রাজনৈতিক মহলে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে।

Advertisement

গরু পাচার মামলায় জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ধরা পড়া ইস্তক বীরভূমে নিজেদের রাজনৈতিক কর্মসূচি বহুগুণ বাড়িয়েছে বিরোধীরা। সিপিএম যেমন সভা-মিছিল করেছে, পিছিয়ে নেই বিজেপি-ও। অনুব্রত জেলবন্দি হওয়ার পর থেকে বিজেপি-র বীরভূম সাংগঠনিক জেলায় বার তিনেক এসেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। সিউড়ি, নলহাটিতে সভাও করেছেন। তবে, কেষ্ট-গ্রেফতারি উত্তর বোলপুর সাংগঠনিক জেলায় এই প্রথম জনসভা করবেন শুভেন্দু বলে জানাচ্ছেন সেখানকার বিজেপি নেতৃত্ব।

স্বাভাবিক ভাবেই শুভেন্দুর সভা ঘিরে ময়ূরেশ্বরে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বেশ উৎসাহ রয়েছে। তবে, দলের দ্বন্দ্বের কাঁটা এই সভা ঘিরেও বিজেপিকে বিঁধ। কোটাসুরের সভাস্থল থেকে অদূরেই প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা প্রাক্তন রাজ্য কার্যকরী সদস্য দুধকুমার মণ্ডলের বাড়ি। তা সত্ত্বেও ওই সভায় তিনি হাজির থাকবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। দুধকুমারের সঙ্গে বিভিন্ন সময় জেলা এবং রাজ্য নেতাদের দ্বন্দ্ব সামনে এসেছে। এক সময় তিনি দল ছেড়ে ‘রাজনৈতিক সন্ন্যাস’ নেওয়ার সিদ্ধান্তও ঘোষণা করেন। ২০২২ সালে সমাজমাধ্যমে তাঁর একটি পোস্ট ঘিরেও বিতর্ক দেখা দেয়। ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমাকে বাদ দিয়ে ব্লক এবং রাজ্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাই আমাকে যাঁরা ভালবাসেন, তাঁরা বসে যান’। আনন্দবাজার ওই পোস্টের সত্যতা যাচাই করেনি।

Advertisement

শুক্রবার দুধকুমার বলেন, ‘‘সভায় যাওয়ার জন্য শ্যামাপদ মণ্ডল ফোন করেছিলেন। সাংগঠনিক জেলা সভাপতি (বোলপুর) সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বাড়িতে এসেছিলেন। কিন্তু, ওই পোস্টের পর রাজ্য কমিটি থেকে আমাকে দলের পদ ব্যবহার করে কোনও পোস্ট করা, এমনকি দলীয় কোন কর্মসূচিতে যোগ দিতেও নিষেধ করা হয়েছিল। তাই সভায় যাব না বলে দিয়েছি।’’ এ প্রসঙ্গে সন্ন্যাসীচরণ জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন।

সভাস্থল হিসাবে ময়ূরেশ্বরকে বাছারও কিছু কারণ আছে। এক সময় ময়ূরেশ্বর বিজেপির ‘শক্ত ঘাঁটি’ হিসাবে পরিচিত ছিল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার অধিকাংশ জায়গায় বিরোধীরা যেখানে প্রার্থী দিতে পারেনি, সেখানে ময়ূরেশ্বর পঞ্চায়েতের দু’টি আসনে বিজেপির দাপুটে নেতা দুধকুমার-সহ দু'জন প্রার্থী জয়লাভ করেন।

শ্যামাপদের দাবি, ‘‘শাসকদলের নেতারা কাটমানি, তোলাবাজি সহ বিভিন্ন দুর্নীতিতে আকণ্ঠ ডুবে রয়েছেন। সভায় আমরা সেই সব দুর্নীতির কথা তুলে ধরব। মানুষ এ বার (পঞ্চায়েত ভোটে) তৃণমূলকে ছুড়ে ফেলে দেবে।’’ এর প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি তথা মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি নেতারা দিল্লির নেতাদের শিখিয়ে দেওয়া কথা বলে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু, মানুষের মনে তা যে রেখাপাত করেনি, তা বিভিন্ন নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তাই হবে। উন্নয়নের নিরিখে মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকেই বেছে নেবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement