প্রতীকী ছবি
করোনা রোগদের ক্ষেত্রে ‘কো-মর্বিডিটি’ চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রথম থেকেই। ‘কো-মর্বিডিটি’ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছিলই। কিন্তু সেই কাজ যাতে যথাযথ হয়, সে ব্যাপারে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে তৎপর হল বীরভূম স্বাস্থ্যজেলা।
স্বাস্থ্যজেলা সূত্রে খবর, কাল, সোমবার থেকে গ্রামীণ এলাকায় আশাকর্মী এবং পুরসভা এলাকায় স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়ে ‘কো-মর্বিডিটি’ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের কাজ ‘নতুন’ করে শুরু করতে এবং সময়ে সেই কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার ছবিটাও আলাদা নয়। স্বাস্থ্যজেলার কর্তারা বলছেন, কো-মর্বিডিটি সংক্রান্ত প্রাথমিক রিপোর্ট আগেই স্বাস্থ্য ভবনে গিয়েছে। কিন্তু সেটা চূড়ান্ত ছিল না। সেই কাজই সঠিক ভাবে করতে ‘কো-মর্বিডিটি’ সমীক্ষার সময় বাড়ানো হয়েছে।
বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) হিমাদ্রি আড়ি বলেন, ‘‘সঠিক সমীক্ষা হলে জেলায় কত সংখ্যক মানুষ উচ্চ রক্তচাপ, কিডনির সমস্যা, ডায়াবিটিস, শ্বাসকষ্ট, লিভারের সমস্যা, ক্যানসারের মতো রোগে ভুগছেন, তার একটা চিত্র পাওয়া যাবে। সেই তথ্য হাতে থাকলে তাঁদের কেউ করোনা আক্রান্ত হলে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করে চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসা সহজ হবে।’’
বীরভূমের দুই স্বাস্থ্যজেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা এ পর্যন্ত ৩৭ জন। বীরভূম স্বাস্থ্যজেলায় মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। তাঁদের মধ্যে বাইরের হাসপাতালে মারা গিয়েছেন ৫ জন। অন্য দিকে, রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলায় মারা গিয়েছেন ২৪ জন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জেলায় যে ক’জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশের ‘কো-মর্বিডিটি’র সমস্যা ছিল। মৃতদের মধ্য়ে প্রবীণওন রয়েছেন। সেই জন্য ‘কো-মর্বিডিটি’ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের কাজ গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রত্যেক কর্মী নির্দিষ্ট প্রশ্নপত্র নিয়ে বাড়ি-বাড়ি যাবেন।
শনিবার পর্যন্ত দুই স্বাস্থ্যজেলায় কোভিড হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৬৫ জন। চারটি সেফ হোমে রয়েছেন ৬২ জন। কিন্তু সংক্রমণের গতিতে লাগাম এলেও নিশ্চিন্ত হতে পারছে না জেলা প্রশাসন। তার পিছনে মূলত দুটি কারণ। প্রথমত, আনলক প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই মানুষের মধ্যে বেপরোয়া মনভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পারস্পরিক দূরত্ববিধি বাজায় রাখা বা মাস্ক পরা মানছেন না অধিকাংশই। দ্বিতীয়ত, করোনা টেস্ট এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা। অথচ ক’দিন পরেই দুর্গাপুজো। তার পরে লম্বা উৎসবের মরসুম। কাতারে কাতারে লোকজন বেরিয়ে পড়েছেন পুজোর কেনাকাটা করতে। স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না বড় অংশই। পরিস্থিতি যে কোনও সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে স্বাস্থ্যকর্তাদের আশঙ্কা। এখানেই সমীক্ষার প্রয়োজনীয়তা।
জেলা স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, ‘‘কো-মর্বিডিটি অর্থাৎ, আক্রান্ত কেউ রয়েছেন কি না, বাড়ি বাড়ি ঘুরে সেই তথ্য তুলে আনবেন আশা এবং পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রতিদিন সেই রিপোর্ট জেলা স্বাস্থ্য দফতরের জমা পড়বে।’’