শ্যামদাসপুরের শিকারিপাড়া।নিজস্ব চিত্র।
খাতায় কলমে এখনও শীত ফুরোয়নি। তবে দোরগোড়ায় হাজির গরম। আর তার সঙ্গে শুরু হল জলের সমস্যা নিয়ে অভিযোগ। জয়পুর ব্লকের রাউতখণ্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রসাদপুর, প্রদ্যুম্নপুর, সুজারগড়, শ্যামদাসপুর, শিকারিপাড়া, গোপবৃন্দাপুর-সহ বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা বিকল নলকূপ নিয়ে জেরবার। বন্ধ সরবরাহের জলও। গ্রামবাসীর অভিযোগ, ব্লক অফিসে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি।
শনিবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, টাইম কল রয়েছে। কিন্তু সরবরাহের জল আসে না। জয়পুরে রাস্তার ধারে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের পাম্প হাউস থেকে জল সরবরাহ হতো ওই গ্রামগুলিতে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় মাস ছয়েক হল জল সরবরাহ বন্ধ। মাস তিনেক আগে থেকে একে একে বেহাল হয়েছে সুজারগড় এবং শিকারিপাড়ার খান পাঁচেক নলকূপগুলিই। মেরামতির জন্য শিকারিপাড়ার একটি নলকূপ থেকে পাইপ তোলা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলি পাশেই পড়ে রয়েছে এখনও। কাজ হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অন্য নলকূপগুলি মেরামতির উদ্যোগই হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা কার্তিক লোহার, অরুণ লোহারদের ক্ষোভ, ‘‘শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের নলকূপটা শেষ ভরসা ছিল। সেখান থেকেও ঘোলা জল উঠতে শুরু করেছে। পঞ্চায়েত আর ব্লক অফিসে জানিয়েও কাজ হচ্ছে না।’’ সুজয়গড় শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের কর্মী রেবা নন্দী দে বলেন, ‘‘ঘোলা জল ওঠায় ক’দিন ধরে বাচ্চাদের জন্য রান্না করা যাচ্ছে না।’’ গ্রামের বধূ বিষ্ণুপ্রিয়া লোহার, মিতা লোহাররা জানান, ভোরে উঠে চার কিলোমিটার উজিয়ে চাষের পাম্প থেকে জল আনতে হচ্ছে তাঁদের। পাম্প বন্ধ থাকলে যেতে হচ্ছে আরও দূরে। শিকারিপাড়ার প্রবীণ ভাস্কর সাঁতরা বলেন, ‘‘টাইম কল বন্ধ হওয়ার পরে প্রায় ৬০টি পরিবার একটা নলকূপের ভরসায় ছিল। সেটা খারাপ হওয়ার পরে পাইপ তুলেই কাজ সারা হয়ে গেল! মাঠ থেকে খেটেখুটে এসে তেষ্টার জলটুকুও পাই না।’’
রাউতখণ্ড গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রিজিয়া বিবি ওই এলাকায় পানীয় জলের সমস্যার কথা মেনে নিয়ে সুরাহার আশ্বাস দিয়েছেন। জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রবিয়াল মিদ্যা বলেন, ‘‘আমরা দ্রুত নলকূপগুলি সারিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।’’
বিডিও (জয়পুর) ধ্রুবপদ শাণ্ডিল্য জানান, পাইপলাইনে সমস্যা হওয়ায় জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বিষয়টি মহকুমার জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের কর্তাদের জানিয়েছেন তিনি। মহকুমাশাসককেও জানানো হয়েছে। দ্রুত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে বলে বিডিও দাবি করেন।