শনিবার বিশ্বভারতীর অনুষ্ঠানে ছবিটি তুলেছেন বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
হাইকোর্ট তাঁর আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। আগামী বুধবারের মধ্যে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রককে শো-কজের জবাব দিতে হবে বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তকে। তাঁকে পদ থেকে সরানো হতে পারে, এমন জল্পনা থামছে না। এরই মধ্যে বিদেশ সফর সেরে প্রায় তিন সপ্তাহ পরে বিশ্বভারতীতে ফিরলেন উপাচার্য। বাইশে শ্রাবণ অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন তিনি। শনিবার শান্তিনিকেতনের ওই অনুষ্ঠানে তাঁর পাশে দেখা গেল সদ্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সুগত মারজিৎকেও।
প্রতি বারের মতো এ দিন ভোরে বৈতালিক এবং সকালে উপাসনা গৃহে ব্রহ্ম উপাসনার মধ্য দিয়ে শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণ দিবসের স্মরণে অনুষ্ঠান শুরু হয়। রীতি মেনে উপাসনার আচার্য ছিলেন উপাচার্য সুশান্তবাবু। উপাসনায় যোগ দেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য দিলীপ সিংহও। তার পরে উত্তরায়ণে পুস্তক প্রকাশ, প্রদর্শনী ও চিত্রভানু প্রদর্শ কক্ষ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাজির হন সকলে। উত্তরায়ণের উদয়ন গৃহে কালানুক্রমিক রবীন্দ্র রচনাবলীর তৃতীয় খণ্ড, ‘টেগোর অ্যান্ড হিজ সার্কেল’, ‘বিশ্বভারতী কোয়ার্টার্লি’, ‘বিশ্বভারতী নিউজ’ এবং ‘রবীন্দ্র-বীক্ষা’ গ্রন্থ ও পত্রিকা প্রকাশ করেন উপাচার্য। পাশাপাশি গ্রন্থন বিভাগের অনলাইন বই বিপণন, ‘হে মহাজীবন হে মহামরণ’ শীর্ষক প্রদর্শনীর উদ্বোধনও তিনি করেন। এ দিনই ‘চিত্রভানু’তে প্রতিমাদেবীর নামাঙ্কিত প্রদর্শশালার উদ্বোধন করে সর্ব সাধারণের জন্য খুলে দেন রবীন্দ্রভবন কর্তৃপক্ষ।
দীর্ঘদিন ধরে একাধিক অনুষ্ঠানে ‘দক্ষিণায়ন’ বা ‘রবিবিতান’-কেই উত্তরায়ণের ‘পরিপূরক’ বলে দাবি করে আসছেন সুশান্তবাবু। অনুষ্ঠানে এ দিন পিছিয়ে ছিল না রবীন্দ্র সঙ্গীত গবেষণা কেন্দ্র, রবিবিতানও। ‘বাল্মিকী প্রতিভা’ সিডি উন্মোচন, ‘চিত্রাঙ্গদা’ প্রদর্শনী উদ্বোধনের অনুষ্ঠান হয়েছে এ দিনই। প্রত্যাশিত ভাবেই সুশান্তবাবু অনুষ্ঠানে উপস্থিতদের রবিবিতান কর্তৃপক্ষের কাজের হিসেব দেন। বিকেলে সুগতবাবু ভাষা-বিদ্যাভবন চত্বরে বৃক্ষরোপণ করেন।
তবে অন্যান্য উৎসব, অনুষ্ঠানের তুলনায় এ দিন বিশ্বভারতীর কর্মী, অধ্যাপকদের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো কম। বিশ্বভারতীর একাংশের মতে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সুশান্তবাবুকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন অনেকেই। তারই ফল এ দিনের এই অনুপস্থিতি। তবে, প্রকাশ্যে এ নিয়ে কেউ-ই মুখ খুলতে চাননি।