barjora

‘বি’ ‘ডি’ গুলিয়ে ফেলছে পঞ্চম শ্রেণির অনেকে

সোনামুখীর এক হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মতে, ‘‘গত বছর যাঁরা পঞ্চম শ্রেণিতে এসেছিল, তাদের মধ্যে পড়াশোনার ঘাটতি যা ছিল, এ বার সে তুলনায় কম।

Advertisement

তারাশঙ্কর গুপ্ত

বড়জোড়া শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৪৫
Share:

স্কুল পড়ুয়ারা বি আর ডি গুলিয়ে ফেলছে। — ফাইল চিত্র।

তৃতীয় শ্রেণি থেকে ইংরেজি পঠনপাঠন চালু রয়েছে। তবু পঞ্চম শ্রেণিতে উঠেও অনেকে ইংরেজি অক্ষর ঠিক মতো লিখতে পারছে না। কেউ কেউ দুই অঙ্কের যোগ করতেও পারছে না। করোনা-পর্ব পার করে পঞ্চম শ্রেণিতে ওঠা পড়ুয়াদের একাংশের মধ্যে শিক্ষার এই ঘাটতিতে উদ্বেগে বাঁকুড়া জেলার শিক্ষকদের অনেকে। তাঁদের মতে, করোনার সময় দু’বছর দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে অনেকের কার্যত পড়াশোনাই হয়নি। তারা একেবারে চতুর্থ শ্রেণিতে উঠেছিল। ফলে এই ঘাটতি স্বাভাবিক। কোনও কোনও স্কুল এই ঘাটতি দূর করতে বিশেষ ক্লাসের পরিকল্পনা নিয়েছে।

Advertisement

সোনামুখীর এক হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মতে, ‘‘গত বছর যাঁরা পঞ্চম শ্রেণিতে এসেছিল, তাদের মধ্যে পড়াশোনার ঘাটতি যা ছিল, এ বার সে তুলনায় কম। তবে এদের নিয়েও যথেষ্ট উদ্বেগ রয়েছে। সমস্যা বেশি ইংরেজি আর অঙ্কে। ইংরেজিতে নিজের নাম লেখা দূরের কথা, অনেকের অক্ষর পরিচিতিও ঠিক মতো হয়নি।’’ পাত্রসায়রের একটি হাই স্কুলের শিক্ষক বলেন, ‘‘তৃতীয় শ্রেণি থেকেই ইংরেজি পড়ানো হচ্ছে। কিন্তু এমন পড়ুয়াও পেয়েছি, যে ‘বি’ এবং ‘ডি’ গুলিয়ে ফেলছে।’’

মেজিয়ার এক হাই স্কুলের গণিত শিক্ষক বলেন, ‘‘এমন কিছু ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে যারা সাধারণ যোগ-বিয়োগও করতে পারছে না। কেউ কেউ দু’অঙ্কের সংখ্যা যোগ করা, হাতে রাখা যোগ একেবারেই পারে না। এদের ঘাটতি মেটাতে সময় লাগবে। তবে এই সব ছাত্রছাত্রীরা পঞ্চম শ্রেণির সিলেবাসের সঙ্গে কতটা তাল মেলাতে পারবে, সন্দেহ রয়েছে।’’

Advertisement

করোনা-পর্বে সংক্রমণের আশঙ্কায় টানা স্কুল বন্ধ থাকায় বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনায় যে বিপুল ঘাটতি হয়ে গিয়েছে, তা বিভিন্ন সময়ে শিক্ষাবিদেরা জানিয়েছেন।

কেন এই সমস্যা? সমাধানের উপায় কী?

জাতীয় শিক্ষকের সম্মানপ্রাপ্ত তথা জয়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বুদ্ধদেব দত্ত বলেন, ‘‘প্রথম প্রজন্মের ছাত্রছাত্রী এখন খুব কম। তবে আর্থ-সামাজিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে দু’বছর পড়াশোনার বাইরে থাকা ভীষণ ক্ষতি করেছে। যে পরিবারের রোজগার চলে গিয়েছিল, সেখানে পড়াশোনা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা হবে না, সেটাই স্বাভাবিক। তবে অনেকখানি ঘাটতি পূরণ হয়েছে। পড়ুয়াদের আন্তরিক ভাবে এবং স্মার্ট ক্লাসের মাধ্যমে পড়ানো গেলে পড়াশোনা আরও আকর্ষণীয় করা সম্ভব।’’ বাঁকুড়ার লোকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোরাচাঁদ কান্ত বলেন, ‘‘পড়াশোনার ঘাটতি দূর করতে বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

বাঁকুড়ার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) জগবন্ধু বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘দু’বছর করোনা-পর্বে অল্প সংখ্যক হলেও কিছু ছাত্রছাত্রীর মধ্যে পড়াশোনায় ঘাটতি রয়েছে। তবে এক বছরে অনেকখানি ঘাটতিপূরণ হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement