Bishnupur Fair 2023

পুলিশ নাজেহাল হয় মেলার ভিড় সামলাতে

বিষ্ণুপুরে নৃত্য না থাকলেও আছে বিষ্ণুপুর সঙ্গীত ঘরানা। বিষ্ণুপুর মেলায় নামজাদা শিল্পীদের সঙ্গে সুযোগ পান লোকশিল্পীরাও। বাঁকুড়া জেলায় পুলিশ সুপার থাকাকালীন দু’বছর কাছ থেকে এই মেলা দেখেছিলাম।

Advertisement

সুখেন্দু হীরা

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:৫০
Share:

কড়া নজর নজরদারি ক্যামেরা তে শনিবার সনধায়।

বিষ্ণুপুর মেলা শান্তিনিকেতনের পৌষমেলার সমগোত্রীয় মেলা বলেই আমার মনে হয়। শান্তিনিকেতন যেমন বাংলার ঐতিহ্যপূর্ণ স্থান, বিষ্ণুপুরও তাই। প্রাচীনতা নয়, ঐতিহ্যগত দিক থেকে দু’টি জায়গাই বাংলার গর্ব। শুনেছি, বিষ্ণুপুর মেলা শুরু হয়েছিল পৌষ মেলার অনুকরণে। জেলা প্রশাসকদের এক ঘরোয়া আড্ডায় বিষ্ণুপুর মেলার প্রস্তাব উঠেছিল। যার ফলশ্রুতি, ১৯৮৮ সালের বিষ্ণুপুর মেলা।

Advertisement

বিষ্ণুপুর মেলা এক অর্থে প্রশাসনিক মেলা। বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক মেলার সদস্য সচিব। বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে একটি মেলা কমিটিও আছে। রবীন্দ্রনাথ চেয়েছিলেন, পৌষমেলাকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ ও নাগরিক মেলবন্ধন গড়ে উঠুক। বিষ্ণুপুর মেলাও তার ব্যতিক্রম নয়। অনেকে বলেন, মন্দিরনগরী খাজুরাহোর নৃত্যোৎসব এবং শান্তিনিকেতনের পৌষমেলার আঞ্চলিক সংস্কৃতির বিচিত্র প্রদর্শনী— দু’য়ের ভাব নিয়ে বাংলার মন্দিরনগরী বিষ্ণুপুরের মেলা।

বিষ্ণুপুরে নৃত্য না থাকলেও আছে বিষ্ণুপুর সঙ্গীত ঘরানা। বিষ্ণুপুর মেলায় নামজাদা শিল্পীদের সঙ্গে সুযোগ পান লোকশিল্পীরাও। বাঁকুড়া জেলায় পুলিশ সুপার থাকাকালীন দু’বছর কাছ থেকে এই মেলা দেখেছিলাম।

Advertisement

২০১৬ সালে আমার দেখা প্রথম বিষ্ণুপুর মেলা। মেলা আমার যতই প্রিয় হোক না কেন, মেলার অত্যাধিক ভিড় পুলিশের প্রিয় নয়। বিষ্ণুপুর মেলার উদ্বোধনের দিন ছাড়াও যেদিন নামজাদা শিল্পীরা আসতেন, সে দিন মেলায় জনপ্লাবন হত। আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। প্রাচীন শহর বিষ্ণুপুরের পথঘাট এমনিতেই সঙ্কীর্ণ। তাই মেলার প্রথমেই ভাবতে হত যাননিয়ন্ত্রণ ও মেলায় বিশেষ পুলিশি ব্যবস্থার কথা।

জনপ্রিয় শিল্পীদের দিয়ে অনুষ্ঠান করিয়ে মাঠ ভরানোর পক্ষপাতী হয়তো অনেকেই নন। আবার মেলার সুযোগে জনপ্রিয় শিল্পীদের কাছ থেকে দেখার প্রবণতাও কম নয়। সেক্ষেত্রে শিল্পী ও দর্শক উভয়ের কথা ভেবে কঠোর নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে হত পুলিশকে। এখনকার মতো মেলা চত্বরে নজরদারির জন্য ছিল না পর্যাপ্ত ড্রোন, নজরদারি ক্যামেরা বা আধুনিক লেজ়ার আলো।

বিষ্ণুপুর শহরের যে ইতিহাস ও ঐতিহ্য আছে, বাঁকুড়ার লোকশিল্পের যে সম্পদ আছে, উভয়ের মেলবন্ধনে মেলা আরও আকর্ষণীয় করারসুযোগ আছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement