ফাইল চিত্র
বিঘার পরে বিঘা জমি পড়ে রয়েছে। অথচ, তা চাষযোগ্য না হওয়ায় কোনও কাজেই লাগানো যাচ্ছে না। জঙ্গলমহলের অন্যতম জেলা বাঁকুড়ায় বহু পরিবারেরই এটা সমস্যা। এ বার অনুর্বর জমিকে উর্বর করে চাষের কাজে লাগাতে এগিয়ে এল রাজ্য সরকার। পতিত জমি থেকে মানুষের আয়ের উৎস বার করতে ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পের মাধ্যমে হবে এই কাজ—এমনই দাবি প্রশাসনের।
বুধবারই রাজ্য সরকারের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই প্রকল্পের ঘোষণা করা হলেও, প্রকল্পটির বাস্তবায়নে চিন্তাভাবনা আগেই করেছিল বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলায় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার একর পতিত জমিতে এই প্রকল্প করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ইতিমধ্যেই ১,৬০০ একর জমি চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, দক্ষিণ বাঁকুড়ার খাতড়া মহকুমার খাতড়া, তালড্যাংরা, সিমলাপাল, রানিবাঁধ, হিড়বাঁধ, ইঁদপুর ব্লকে জমিগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই মহকুমার বাকি দু’টি জঙ্গলমহল ব্লক— রাইপুর ও সারেঙ্গাতেও জমি চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া চলছে।
বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) রাজু মিশ্র বলেন, “খাতড়া মহকুমার ছ’টি ব্লকে আমরা জমি চিহ্নিত করেছি ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পে চাষ করার জন্য। রাইপুর, সারেঙ্গা-সহ বাঁকুড়া সদর মহকুমার ব্লকগুলিতেও এই প্রকল্পের জন্য জমি দেখা হচ্ছে।” তিনি জানান, মাটির সৃষ্টি প্রকল্পে কৃষি, উদ্যানপালন, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর ও একশো দিনের প্রকল্পের মাধ্যমে অনুর্বর জমিগুলিতে কাজ হবে। প্রকল্পটিকে বাস্তবায়িত করতে একাধিক বৈঠকও হয়েছে প্রশাসনিক স্তরে।
বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি তথা রাজ্য এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ় কর্পোরেশনের ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশিস বটব্যাল বলেন, “বাঁকুড়ার লাল কাঁকুরে মাটিতে আগেই আমরা সুস্বাদু আঙুর, বেদানা ফলিয়েছি। আম চাষে গোটা দেশের নজর কেড়েছে বাঁকুড়া। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পে অনুর্বর জমিকে উর্বর করে মানুষের আয়ের ব্যবস্থা করা হবে।” তাঁর সংযোজন, “গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এই প্রকল্পের চেয়ে ভাল আর কিছু হতে পারে না।”
প্রকল্পটি যাতে ঠিক ভাবে বাস্তবায়িত হয়, সে দাবি তুলছেন বিরোধীরা।
বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার বলেন, “রাজ্য চমকপ্রদ অনেক প্রকল্প ঘোষণা করলে,ও আমজনতা কোনও সুবিধা পাচ্ছেন না। সদ্য করোনায় কাজ হারানোদের জন্য ঘোষণা করা ‘প্রচেষ্টা’ প্রকল্পে আমরা দেখলাম, প্রচুর মানুষ আবেদনই করতে পারলেন না। এ ক্ষেত্রে যে তেমন হবে না, তা নিশ্চিত করতে হবে।”