ঘোষেরগ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। এই ছবিই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।
তৃণমূলের পঞ্চায়েতে বিজেপির মন্ত্রী! চর্চা
সন্দেশখালি-কাণ্ড ঘিরে তৃণমূল ও বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে তিক্ততা ক্রমশ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে একটি পঞ্চায়েতে গিয়ে তৃণমূলের প্রধান ও তাঁর দলের নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদকে জমিয়ে গল্প করতে দেখে অনেকেই তাজ্জব। বাঁকুড়ার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের এই ছবি সমাজমাধ্যমে দিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপিরই একাংশ।
যদিও তাতে আমল দিতে নারাজ সুভাষ। তিনি বলেন, “উন্নয়নের কাজে রাজনৈতিক ভেদাভেদ মানা বিজেপির নীতি নয়। আমি সেই আদর্শকে সামনে রেখেই কাজ করেছি। এ নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুললে আমার কিছু বলার নেই।”
ঘটনা হল, সুভাষের বিরুদ্ধে বিজেপিরই একাংশের ক্ষোভের ঘটনা বার বার প্রকাশ্যে এসেছে জেলায়। কখনও রাস্তায় নেমে সুভাষের ছবি নিয়ে বিক্ষোভ করা, কখনও সমাজমাধ্যমে সাংসদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশের মতো ঘটনাকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যেই অস্বস্তি দানা বেধেছে।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার তৃণমূল পরিচালিত ছাতনার ঘোষেরগ্রাম পঞ্চায়েতে যান সুভাষ। সেখানে প্রধানের অফিসে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান। ভাইরাল হওয়া ছবিগুলি পঞ্চায়েত প্রধানের অফিসেই তোলা বলে দাবি (আনন্দবাজার সত্যতা যাচাই করেনি)। ছবিতে সাংসদ সুভাষ সরকার, ঘোষেরগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শান্তনু কুন্ডু, স্থানীয় বিজেপি নেতা কমল নায়ার, তৃণমূলের ছাতনা ব্লক কমিটির সদস্য রামদাস মুর্মু ও তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য পরমেশ্বর কুন্ডুও রয়েছেন।
সুভাষ বলেন, “ঘোষেরগ্রাম পঞ্চায়েতে সাংসদ তহবিল থেকে একটি ব্যাটারিচালিত অ্যাম্বুল্যান্স দিতে চাই। ওই গাড়ির খরচ খুব কম। এতে স্থানীয় মানুষজন উপকৃত হবেন। এ নিয়েই সরাসরি প্রধানের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম।” তাঁর দাবি, জেলা প্রশাসনের মাধ্যমেও ওই প্রস্তাব পঞ্চায়েতকে পাঠানো যেত। তবে তাতে অনেকখানি সাপেক্ষ যেত। তাই সরাসরি পঞ্চায়েতে গিয়ে কথা বলেছেন।
তবে ভাইরাল হওয়া ছবিতে তৃণমূল নেতারা থাকায় প্রশ্ন উঠেছে। সুভাষ বিরোধী বিজেপি নেতাদের প্রশ্ন, “উনি পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে প্রধানের সঙ্গে কথা বলতেই পারতেন। কিন্তু তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে ছবি তোলার প্রয়োজন কেন পড়ল?’’ সুভাষের যুক্তি, “পঞ্চায়েত ভবন সরকারি অফিস, কোনও রাজনৈতিক দলের কার্যালয় নয়। সেখানে যে কেউ নিজের কাজে যেতেই পারেন।”
বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডল বলেন, “সাংসদ সরিকারি কাজে পঞ্চায়েত অফিসে গিয়েছিলেন। এর সাথে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। কেউ এনিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বলে আমার জানা নেই।”
তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য পরমেশ্বর বলেন, “বিজেপি সাংসদ পঞ্চায়েত অফিসে এসে প্রধানকে বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছেন। ঘটনাচক্রে আমি সেই সময় পারিবারিক জমিজমা সংক্রান্ত একটি বিবাদের ফয়সালা করতে আমি পঞ্চায়েত অফিসে গিয়েছিলাম। সাংসদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক কথাবার্তা হয়েছে। এখানে রাজনীতির কোনও বিষয় নেই।” সাংসদের প্রস্তাব নিয়ে পঞ্চায়েত আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান পঞ্চায়েত প্রধান।