বিজেপিকে নিশানা তৃণমূলের
Bagtui

কেন খুন বাবর, রহস্য কাটছে না

রামপুরহাটের বড়শাল পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধানের ভাই বাবর খুনের ঘটনায় তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:০৫
Share:

রামপুরহাট মেডিক্যালে গুলিবিদ্ধ বাবর। নিজস্ব চিত্র।

রাতের অন্ধকারে কে বা কারা গুলি করে মারল বগটুই গ্রামের তৃণমূল কর্মী বাবর শেখকে? মঙ্গলবারের ওই ঘটনা নিয়ে পুলিশ এখনও অন্ধকারে। গ্রেফতারও করা যায়নি কাউকে।

Advertisement

তবে, রামপুরহাটের বড়শাল পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধানের ভাই বাবর খুনের ঘটনায় তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই বাবরকে মেরেছে। বিজেপি খুনের ঘটনায় তাদের কেউ জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। সব মিলিয়ে ঘটনার পর থেকেই বগটুই গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এসডিপিও (রামপুরহাট) এবং আইসি (রামপুরহাট) সময় মতো বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে গ্রামে পৌঁছে যাওয়ার ফলে গ্রামে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়ানো গিয়েছে বলে জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান। গ্রামে এখনও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ জানান, খুনের ঘটনায় বুধবার দুপুর পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এলাকা থেকে ৭ জনকে আটক করেছে। কী কারণে খুন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাবর শেখ আগে আগে ট্রাক্টর চালকের কাজ করতেন। পরবর্তীতে রামপুরহাট শহরের এক মুরগি ব্যবসায়ীর গাড়ি চালাতেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে জিতে বাবরের দাদা ভাদু শেখ বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হন। তার পর থেকে বাবর শেখ ঠিকাদারির কাজ করতেন এবং দাদার বিভিন্ন ব্যবসা দেখভাল করতেন। প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার রাতেও বগটুই গ্রামের কবরস্থানের পাশ দিয়ে মোটরবাইকে বাড়ি ফিরছিলেন বাবর। গ্রামবাসীরা জানান, কবরস্থানের পাশের রাস্তাটা বেশ অন্ধকার। সন্ধ্যার পর থেকে ওই রাস্তায় লোকজনের যাতায়াত খুবই কম। ভাদু শেখের দাবি, আগাম পরিকল্পনা করেই তাঁর ভাইকে খুন করা হয়েছে। অন্ধকার ও নির্জনতার সুযোগ নিয়েই ওই রাস্তায় দুষ্কৃতীরা ওঁত পেতে ছিল। বাবরের মোটরবাইক আসতেই তাঁর পথ আটকে মাথায় গুলি করে পালায় আততায়ীরা।

ভাদু বলেন, ‘‘ঘটনার মিনিট কুড়ি আগেই ভাইয়ের সঙ্গে আমার কথা হয় এসডিপিও বাংলোর সামনে। তার পরে ও বাইক নিয়ে বেরিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরেই খবর এল, ভাইকে কবরস্থানের কাছে গুলি করা হয়েছে। এলাকায় পৌঁছে দেখি, ভাই মোটরবাইকেই রক্তাক্ত অবস্থায় বসে আছে।’’ তিনি জানান, রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে বাবরের অবস্থা দেখে বর্ধমান মেডিক্যালে রেফার করে দেওয়া হয়। কিন্তু, রামপুরহাট শহর পেরোনোর আগেই বাবর মারা যান।

খবর পেয়ে রাত সাড়ে দশটা নাগাদ তৃণমূলের রামপুরহাট ১ ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেন হাসপাতালে আসেন। আনারুল ও ভাদু জানান, বাবর শেখ তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। আগামী ১০ জানুয়ারি রামপুরহাটে অনুব্রত মণ্ডলের সভার জন্য কর্মী সমাগম এবং প্রচারের কাজেও যুক্ত ছিলেন বাবর। আনারুলের দাবি, ‘‘তৃণমূল বিরোধী অনেকে এখন বিজেপিতে ঢুকছে। এলাকায় তৃণমূলের প্রভাব খর্ব করার জন্য বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বাবরকে গুলি করে খুন করেছে।’’

অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপি-র জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘‘বিজেপি খুনের রাজনীতি করে না। এলাকায় তোলাবাজি নিয়ে নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোলের জেরেই ওই খুনের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করার দাবি জানাচ্ছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement