প্রতীকী ছবি।
মেয়ে যে দিন জন্মেছে, সে দিনই জন্মেছেন তার বাবা, মা-ও! ‘সৌজন্যে’ ডিজিটাল রেশন কার্ড।
শুক্রবার ডাকঘর থেকে নতুন ডিডিটাল রেশন কার্ড পেয়ে তিন জনেরই জন্মতারিখ ‘২০১১ সালের ২৬ মার্চ’ দেখে চক্ষু চড়কগাছ পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর শহরের নন্দুয়াড়ার বাসিন্দা আদ্রার রেলকর্মী গৌতম চক্রবর্তীর। তিনি বলেন, ‘‘কার্ড দেখার পরে, চোখ কপালে উঠেছে। কার্ডে আমার, স্ত্রী নন্দিতা ও মেয়ে বিনুর জন্ম তারিখ একই। বিনুর জন্ম তারিখই আমাদের দু’জনের জন্ম তারিখ বলে ছাপানো হয়েছে। কার্ড ছাড়ার আগেও তা যাচাই করা হয়নি?’’ তিনি জানান, শনিবার ও রবিবার দু’দিন খাদ্য সরবরাহ দফতরের অফিস বন্ধ থাকছে। তাই সোমবার বিষয়টি তিনি খাদ্য দফতরে জানাবেন।
তবে এই ভুল তাদের দফতর থেকে হয়নি বলে দাবি করেছেন খাদ্য় সরবরাহ দফতরের রঘুনাথপুর মহকুমার আধিকারিক মানস পাত্র। তিনি দাবি করেন, ‘‘গৌতমবাবু অনলাইনে ভর্তুকিবিহীন ডিজিটাল রেশন কার্ডের আবেদন করেছেন। জন্ম তারিখ ভুল দেওয়া হয়ে থাকলে, আমাদের দফতরের কর্মীদের করণীয় কিছু থাকে না।” মানসবাবু জানান, গৌতমবাবু তাঁদের দফতরে গিয়ে পাঁচ নম্বর ফর্ম পূরণ করে সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারেন। তা হলে ত্রুটি সংশোধন করে নতুন কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
গৌতমবাবু জানাচ্ছেন, আগে তাঁদের রাষ্ট্রীয় খাদ্য সুরক্ষার রেশন কার্ড ছিল। মাস সাত-আট আগে ভর্তুকিবিহীন নতুন ডিজিটাল রেশন কার্ড করাবেন বলে ঠিক করেন। সে সময়ে তিনি রঘুনাথপুরে খাদ্য় সরবরাহ দফতরে যান। সেখান থেকে জানানো হয়, নতুন রেশন কার্ডের জন্য অনলইনে আবেদন করলেই হবে। গৌতমবাবুর দাবি, ‘‘বাড়িতেই কম্পিউটারে নিজের, স্ত্রী ও মেয়ের আধার কার্ডের নম্বর-সহ প্রয়োজনীয় তথ্য় দিয়ে নতুন রেশন কার্ডের জন্য় আবেদন করেছিলাম। আধার কার্ডে থাকা জন্মতারিখ অনুযায়ী, আবেদন করেছি। তা হলে ভুল হবে কেন?” এ প্রশ্নের অবশ্য় সদুত্তর মেলেনি খাদ্য় সরবরাহ দফতর থেকে।
তবে বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। শুক্রবারই গৌতমবাবু তাঁদের তিন জনের রেশন কার্ডের ছবি ফেসবুকে আপলোড করেন। তার পরেই শুরু হয়েছে বিভিন্ন মন্তব্য়। গৌতমবাবুর সহকর্মীরা রসিকতা করে মন্তব্য করছেন, এক দিকে ভালই হয়েছে। রেশন কার্ডের জন্ম তারিখ দেখিয়ে গৌতমবাবু আরও অনেক বছর চাকরি করতে পারবেন। অনেকে আবার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সরাসরি খাদ্য় দফতরের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন।
বছর চুয়াল্লিশের গৌতমবাবু ও তাঁর স্ত্রী বছর পঁয়ত্রিশের নন্দিতা বলছেন, ‘‘কী কাণ্ডটাই না ঘটেছে! আমাদের সবার বয়স এখন ন’বছরে দাঁড়িয়েছে। এ ধরনের ভুল প্রত্যাশিত ছিল না।”