কোটশিলায়। নিজস্ব িচত্র
আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা হোক বা অন্য কোনও অভিযোগ— পুলিশ সুপারকে ফোন করে অনুযোগ বা অভিযোগ জানাতে চান অনেকে। কিন্তু সমস্যা হল, বৈঠকে ব্যস্ত থাকলে অনেকের ফোন ধরতে পারেন না পুলিশ সুপার। এ বার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের পথ মসৃণ করতে জেলার কোণে কোণে পুলিশকর্মীদের মারফত একটি ‘হোয়াটস অ্যাপ’ নম্বর পৌঁছে দিচ্ছেন পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরগন। তাঁর বার্তা—‘সমস্যা বা অভিযোগ জানিয়ে এই নম্বরে হোয়াটস অ্যাপ করুন। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে’।
পুলিশ সুপারের এই পদক্ষেপকে জেলা পুলিশ মহলে অনেকেই ‘এসপি-কে বলো’ কর্মসূচি বলে অভিহিত করেছেন। যদিও ওই উদ্যোগের পোশাকি কোনও নাম দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বা অভিযোগ জানাতে অনেকেই ফোন করেন। কিন্তু বৈঠকে বা অন্য কোনও কাজে ব্যস্ত থাকলে সব সময় ফোন ধরা সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে ওই নম্বরে (৮৯৬৭১৭৭৬৬৬) ‘হোয়াটস অ্যাপ’ করলে সুবিধা হবে। আমি ফাঁকা হয়ে সেই বার্তা দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।’’ পুলিশ সুপার জানাচ্ছেন, এই নম্বর ব্যবহার করবেন তিনি নিজে।
গত মাসে জেলার দায়িত্ব পেয়েই জনসংযোগ বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছেন পুলিশ সুপার। জেলাবাসীর অভাব-অভিযোগ শোনা এবং সরকারি প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধাগুলি প্রচারের উপরে জোর দিতে বলেছেন তিনি। এ বার সেই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হল ‘হোয়াটস অ্যাপ’ পরিষেবা।
পুলিশ সুপারের দাবি, এই উদ্যোগ জেলায় ভাল সাড়া ফেলেছে। তিনি জানান, দিনে ১০-১৫টি সমস্যা বা অভিযোগ ওই ‘হোয়াটস অ্যাপ’ নম্বরে আসছে। অনেকে আবার কর্মসংস্থানের সমস্যার কথাও তাঁকে জানাচ্ছেন। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘এই সমস্যা (কর্মসংস্থান) মেটানো আমাদের কাজ নয়। তবে চাকরির পরীক্ষা কী আছে, কী ভাবে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হবে, তা জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।’’
সূত্রের খবর, জনসংযোগে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার জন্য পুলিশ সুপার জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় ‘পুলিশ সহায়তা কেন্দ্র’ খুলতে বলেছেন। জেলার প্রাক্তন এক পুলিশ সুপার এই ধরনের কেন্দ্র চালু করেছিলেন। এ বার অনেকটা সে ধাঁচেই ফের সহায়তা কেন্দ্র শুরু হয়েছে। সেখানে শুধু অপরাধ বা আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যার কথাই শোনা হচ্ছে না, গ্রামের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনছেন পুলিশকর্মীরা। পাশাপাশি, সরকারের জনমুখী প্রকল্পেগুলির প্রচারও চলছে সেই কেন্দ্র থেকে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘কোনও গ্রামে হয়তো রাস্তার বা জলের সমস্যা আছে, কোথাও হয়ত টিউবওয়েল বিকল হয়ে পড়ে আছে, ওই ওই ধরনের ছোটখাট সমস্যা শুনে থানা সেগুলি জানাবে সংশ্লিষ্ট দফতরে বা প্রশাসনের কাছে।”
জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘কী-কী সরকারি প্রকল্প আছে, সেগুলি থেকে কী সুবিধা পাওয়া যায়, কার কাছে এবং কী ভাবে আবেদন করতে হয়, অনেকেরই তা নিয়ে সম্যক ধারণা নেই। তাই পুলিশকর্মীরা গ্রামে গিয়ে সেগুলি প্রচার করছেন।’’