বুধবার ঘোষণা করা হয় বাঁকুড়ার জেলা কমিটি। — নিজস্ব চিত্র।
দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফরের রেশ কাটতে না কাটতেই প্রকাশ্যে বাঁকুড়ায় তৃণমূলের কোন্দল। বুধবার অভিষেক বাঁকুড়ার ওন্দা স্টেডিয়ামে জনসভা করে ফিরে যেতেই তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্র ৭৭ জনের নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করেন। সেই ঘোষণার পরই সমাজ মাধ্যমে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তৃণমূল নেতাদের একাংশ। সেই তালিকায় রয়েছেন তালডাংরার বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তীও। জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলেছেন অরূপ।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি এবং একাধিক শাখা সংগঠনের জেলা সভাপতি থাকলেও জেলা কমিটির অস্তিত্ব ছিল না গত কয়েক মাস ধরে। বুধবার বাঁকুড়ার ওন্দা স্টেডিয়ামে জনসভা করেন অভিষেক। তার পর বুধবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়ার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে দলের নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করেন দিব্যেন্দু। নতুন জেলা কমিটিতে ৮ জন সহ-সভাপতি, ৮ জন সাধারণ সম্পাদক, ১১ জন সম্পাদক-সহ মোট ৭৭ জন রয়েছেন। এর পরই ক্ষোভের পারদ চড়তে শুরু করে দলের নেতা-কর্মীদের একাংশের মধ্যে। সমাজমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দেন অনেকে। তৃণমূল নেতৃত্বের কেউ সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘দলবদলুরা জায়গা পেলেও জেলা কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি প্রকৃত নেতাদের।’’ কেউ লেখেন, ‘‘পাঁচিলে বসে থাকা নেতারা এ বার তৃণমূলের জেলা কমিটিতে।’’
এই আবহে বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভ উগরে দেন তালডাংরার তৃণমূল বিধায়ক। অরূপ বলেন, ‘‘জেলা কমিটি গঠনের ব্যাপারে বিধায়কদের মতামত নেওয়া হয়নি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সি সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন কাদের জেলা কমিটিতে জায়গা দেওয়া হবে। কিন্তু সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অবাঞ্ছিত এবং পাঁচিলে বসে থাকা লোকদের জেলা কমিটিতে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে। জেলা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি স্বেচ্ছাচারিতা করেছেন। এতে কর্মীদের মনোবল ভেঙে যাবে। আমরা বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে জানাব।’’
বিষয়টি নিয়ে মারাত্মক অভিযোগ তুলেছেন সদ্য ঘোষিত জেলা কমিটির সদস্য কল্যাণ দে-ও। তিনি বলেন, ‘‘ব্যক্তিস্বার্থে দলের জেলা সভাপতি সকলকে অন্ধকারে রেখে এই জেলা কমিটি গঠন করেছেন। দলের প্রার্থীকে হারানোর জন্য যারা মরিয়া চেষ্টা করল তাদের কমিটিতে বড় পদ দেওয়া হয়েছে। আমার ধারণা, ব্যক্তি স্বার্থ ছাড়াও এ ব্যাপারে আর্থিক লেনদেনও হয়েছে।’’
তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সেই দিব্যেন্দু অবশ্য বলছেন, ‘‘জেলা কমিটি নিয়ে ক্ষোভের কথা আমরা শুনিনি। যা হয়েছে তা দলের ঊর্ধতন নেতৃত্বের অনুমতি নিয়েই হয়েছে। এর বেশি কিছু আমি বলব না।’’