আদ্রায় পুনর্বাসনের দাবিতে মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।
আগে পুনর্বাসন, পরে উচ্ছেদ—এই দাবিতে আদ্রায় মিছিল করল তৃণমূল প্রভাবিত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি। রবিবার বিকেলে সংগঠনের শতাধিক সদস্য দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল করেন। পরে আদ্রার নর্থ বুকিং কাউন্টারের সামনে পথসভা হয়েছে। সেখানে ছিলেন তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দলগত ভাবে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন সৌমেন।
আদ্রা স্টেশনের উন্নয়নের কাজে রঘুনাথপুর মোড়ের অটো স্ট্যান্ড থেকে গার্লস স্কুল মোড় পর্যন্ত রাস্তার পাশে রেলের জমিতে থাকা বৈধ ও অবৈধ, দু’ধরনের দোকান উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদ্রার রেল কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি এ নিয়ে কিছু ব্যবসায়ীকে নোটিস দেয় রেল। শনিবার সকালে এলাকায় মাইকে প্রচার করে সোমবার থেকে উচ্ছেদের কাজ শুরুর বিষয়েও ঘোষণা করা হয়। তবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে আচমকা উচ্ছেদের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জমেছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে পথে নামা শাসকদল প্রভাবিত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তা দীনু চৌধুরী বলেন, “আমরা উন্নয়নের পক্ষে। তবে পুনর্বাসন না দিয়ে এ ভাবে উচ্ছেদ করলে কয়েকশো ছোট-বড় ব্যবসায়ী রুজিরুটি হারিয়ে কার্যত পথে বসবেন।”
নর্থ বুকিং কাউন্টার তথা স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ওই সব ছোট-বড় দোকানের ব্যবসায়ীরা গত কয়েক দশক ধরে ব্যবসা করে আসছেন। আদ্রার আড়রা পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান তুফান রাই বলেন, “যে এলাকা উচ্ছেদের আওতায় আসছে, তাতে অন্তত তিনশোর মতো দোকান ভাঙা পড়বে। ওই দোকানগুলির উপরে আদ্রার বাসিন্দাদের বড় অংশ নির্ভরশীল। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ করা হলে ওই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আদ্রার বড় অংশের বাসিন্দারাও সমস্যায় পড়বেন।”
রেলের সিদ্ধান্তকে ‘অমানবিক’ বলে দাবি করেছেন শাসকদলের জেলা সভাপতি সৌমেনও। তাঁর দাবি, রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী সব সময়ে আগে পুনর্বাসন ও পরে উচ্ছেদের পক্ষপাতী। আদ্রায় উড়ালপুল তৈরির সময়ে প্রশাসনিক মহলে আলোচনা করে আগে এলাকার দোকানদারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সৌমেনের কথায়, “পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ করা চলবে না আর যথাযথ এলাকায় ওই ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা রেলকেই করতে হবে। আমরা এই দাবিতে দলগত ভাবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে রয়েছি।”
রেল কর্তৃপক্ষের যদিও দাবি, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের লক্ষ্যে আদ্রা স্টেশনের সার্বিক উন্নয়ন দরকার। তার জন্য প্রয়োজন জমির। তবে ওই জমিতে অবৈধ ভাবে দোকান করে ব্যবসা চলছে। আদ্রার ডিআরএম সুমিত নারুলা বলেন, “যাঁরা রেলের জমিতে অবৈধ ভাবে ব্যবসা করছেন, তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা রেলের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।”