নবাগতদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে তৃণমূলের পতাকা। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলে যোগ দিলেন পুরুলিয়ার জয়পুরের বিজেপি নেতা শঙ্করনারায়ণ সিংহ দেও। রবিবার বিকেলে তাঁর সঙ্গে পুরুলিয়ায় গিয়ে জয়পুর পঞ্চায়েতের বিজেপির প্রধান, উপপ্রধান-সহ মোট ১২ জন নির্বাচিত সদস্যও তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। তবে, দলবিরোধী কাজের অভিযোগে ওই পঞ্চায়েতের প্রধান অপর্ণা বাদ্যকরকে কিছু দিন আগে সাসপেন্ড করেছে বিজেপি। এ দিন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন জয়পুর ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি চঞ্চল মৈত্রও।
আশির দশকের গোড়ায় সক্রিয় রাজনীতিতে আসেন জয়পুর রাজপরিবারের সদস্য শঙ্করবাবু। প্রথমে ছিলেন কংগ্রেসে। জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও ছিলেন। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের আগে যান বিজেপিতে। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘বিজেপিতে স্বচ্ছতা নেই। দলের জেলা কার্যালয়ের জন্য জমি কেনা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। এ দিকে, কোনও প্রশ্ন করলেই দলবিরোধী বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া বিজেপি নানা জনবিরোধী সিদ্ধান্তও নিচ্ছে। মানুষের কাছে তার জবাব দিতে পারছি না। তাই দল ছাড়লাম।’’
বিজেপির জেলা সহ সভাপতি তথা জয়পুরের নেতা রবিন সিংহ দেও অবশ্য বলছেন, ‘‘বিজেপি ঠিক পথেই চলছে। কেউ হয়তো নিজের মতো চলতে চাইছেন। সেটা হয়ে উঠছে না বলেই ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।’’ তাঁর দাবি, জেলা কার্যালয়ের জন্য জমি কেনার বিষয়টি জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের আলোচনার ভিত্তিতেই হয়েছে।
জেলা পরিষদের দু’বারের সদস্য, জয়পুর ব্লক কংগ্রেস সভাপতি চঞ্চল মৈত্র জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব সামলেছেন। রাজ্যে পালাবদলের আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু ফের কংগ্রেসে চলে যান। সেই সময়ে তাঁর সঙ্গে শান্তিরাম মাহাতোর বিরোধীতার কথা শোনা গিয়েছিল। এ দিন সেই শান্তিরামবাবুর হাত থেকেই তৃণমূলের পতাকা নিয়েছেন চঞ্চলবাবু।
তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে চঞ্চলবাবু বলেন, ‘‘পাঁচটা বছর কংগ্রেস করে বিধানসভা ভোটের সময় দেখা যাচ্ছে জয়পুর আসনটি ফরওয়ার্ড ব্লককে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। শান্তিদা আমার রাজনৈতিক গুরু। পুরনো কথা ভুলে এখন ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের সময়। সুজয়দা-সহ সবাই বললেন। তাই তৃণমূলে এলাম।’’
জেলা কংগ্রেসের সহ সভাপতি উত্তম বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলছেন, ‘‘চঞ্চল মৈত্র ইদানীং দলের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখছিলেন না। বৈঠকেও আসছিলেন না। কর্মীরাই তাঁর অপসারণের দাবি তুলেছিলেন। গত ২৮ অগস্ট তাঁকে সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।’’
এ দিন দলবদলের সময়ে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি গুরুপদ টুডু, দলের দুই কো-অর্ডিনেটর সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুষেণচন্দ্র মাঝি, জয়পুরের তৃণমূল বিধায়ক শক্তিপদ মাহাতো প্রমুখ। কর্মসূচিতে সামাজিক দূরত্বের বিধি না মানার অভিযোগ উঠেছে। তবে তৃণমূলের মুখপাত্র নবেন্দু মাহালি বলেন, ‘‘মাস্ক পরে যোগদান হয়েছে। আর দূরত্ব বজায় রাখতে যোগদান পর্বটি কার্যালয়ের ভিতরে না করে রাজপথে হয়েছে।’’