সার বেঁধে দাঁড়িয়ে গাড়ি। সিউড়ি বাইপাসে জাতীয় সড়কের নিত্যদিনের ছবি। নিজস্ব চিত্র tapasphoto09@gmail.com
১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে আবদারপুরের কাছে তৈরি হচ্ছে রেল-উড়ালপথ। দীর্ঘক্ষণ রেলগেট বন্ধ থাকার ফলে তৈরি হওয়া যানজট সমস্যা দূর করতে এই উড়ালপথের ভাবনা। কিন্তু সেই কাজের ফলেই রেলগেট সংলগ্ন রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছে। ফলে, প্রায়ই লম্বা যানজট তৈরি হচ্ছে জাতীয় সড়কের উপরে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতি দিনই সদাইপুর থেকে তিলপাড়া পর্যন্ত রাস্তায় দীর্ঘ যানজট তৈরি হচ্ছে। রাস্তার একটি দিক সম্পূর্ণ বন্ধ। অন্য দিক, দিয়ে অত্যন্ত ধীর গতিতে যান চলাচল করছে। সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন জেলার ডিএসপি (ট্রাফিক) কুণাল মুখোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, ‘‘আবদারপুর রেলগেটের কাছে যাতে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকে, তার জন্য আমরা ২৪ ঘণ্টা তৎপর রয়েছি। তবে রাস্তা খারাপ থাকার কারণে কিছুটা সমস্যা থেকেই যায়।”
কুণাল জানান, দৈনিক গড়ে ৫২ বার আবদারপুর রেলগেট বন্ধ হয়। প্রতি বার গড়ে ১০ মিনিট ওই গেট বন্ধ থাকে। অর্থাৎ দিনে গড়ে ৯-১০ ঘণ্টা রেলগেট বন্ধই থাকে। একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়কের ক্ষেত্রে এতক্ষণ রাস্তা বন্ধ থাকার কারণে যানজট অত্যন্ত স্বাভাবিক। বিশেষত রাতের দিকে বেশিক্ষণ গেট বন্ধ থাকলে ট্রাক চালকেরা ঘুমিয়ে পড়েন। তাতে যানজটের আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়।
কুণাল জানান, তিলপাড়ার কাছে জাতীয় সড়কের উপরে কয়েকটি জায়গা অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় ছিল। বার বার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরে রবিবার রাতে তাঁরা ওই জায়গাগুলির মেরামত করেন। ফলে, ওখানে গাড়ি বিকল হওয়া বা যানজটের আশঙ্কা অনেকটা কমবে বলে দাবি কুণালের।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জাতীয় সড়কে রেল উড়ালপথের অংশের কাজ আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ফলে, এই বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না। তবে কাজ দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে এটুকু বলা যায়।’’ অন্য দিকে, পূর্ব রেলের এক আধিকারিক জানান, "দুর্ঘটনা এড়াতে রেলগেট ব্যবহৃত হয়। যানজটের সমস্যা থাকলেও রেলগেট বন্ধের সময় কমানোর কোনও সুযোগ নেই। তবে এই সমস্যা সাময়িক, জাতীয় সড়কে উড়ালপথের কাজ মিটলে আশা করি সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।’’
রাস্তা খারাপের পাশাপাশি, গাড়ি থামিয়ে পুজোর চাঁদা তোলার ফলেও যানজট বাড়ছে বলে অভিযোগ ট্রাক চালকদের একাংশের। পুজোর মরসুমে প্রতি বছরই এমন চাঁদার জুলুম থাকে বলে জানান ইকবাল খান, দিলীপ কাহার-সহ বেশ কয়েক জন ট্রাকচালক জানান। তাঁরা বলেন, “স্থানীয় ছেলেরাই প্রধানত রাস্তায় চাঁদা তোলেন। অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের কাছে যে রসিদ থাকে, তাতে কোনও ক্লাবের নামও থাকে না। আমরা কখনও চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আমাদের শাসানো হয়। মারধরের ঘটনাও আগে ঘটেছে। ঝামেলা এড়াতে আমরা টাকা দিয়ে দিই।” কুণাল বলেন, “এই বিষয়ে আমাদের কাছে এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে এই বিষয়টি নিশ্চয় আমরা খতিয়ে দেখব।”