সার্ভিস কালীর নামডাক ক্রমেই বাড়ছে। নিজস্ব চিত্র।
সরকারি হোক বা বেসরকারি, চাকরির বাজারে ঘোর মন্দা। অবস্থা এমনই যে বেকারত্বের হার অতীতের সব রেকর্ডকে ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়ার পথে এগোচ্ছে ধীরেসুস্থে। কিন্তু চাকরির বাজারে মন্দা যতই আসুক না কেন ‘সার্ভিস কালী’র নামডাক আজও একই রকম। জনশ্রুতি, এখানে মানত করলেই নাকি চাকরি মেলে, গত ৮২ বছর ধরে এই বিশ্বাসে ভর করে সার্ভিস কালীর পুজো করে আসছেন বাঁকুড়ার সোনামুখীর মানুষ।
কথিত আছে, এক সময় ধর্মতলায় ষোলো আনার কালী নামের একটি পুজো হত। ৮২ বছর আগে পাড়ার বাসিন্দাদের বিবাদের জেরে কালী পুজোটি দু’ভাগ হয়ে যায়। স্থানীয়দের দাবি, সে সময় স্থানীয় এক পরিবহণ ব্যবসায়ী বাসের রুট পারমিট সংক্রান্ত সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন। এলাকায় নতুন করে চালু হওয়া পুজোয় কালীর কাছে মানত করেন। হাজার চেষ্টাতেও পারমিট সংক্রান্ত যে সমস্যা থেকে মুক্তি সম্ভব হচ্ছিল না সেই সমস্যা পুজো মিটতেই মিটে যায়। কালীর মহিমা ছড়িয়ে পড়ে। শোনা যায়, এলাকার যুবকদের চাকরির মনস্কামনাও পূর্ণ করেন দেবী। এর পর থেকেই ওই কালীর নাম লোকমুখে ষোলো আনা সার্ভিস কালী হয়ে যায়।
চাকরির এই মন্দা বাজারে সোনামুখীর সার্ভিস কালীর মহিমা ছড়িয়ে পড়েছে দেশ থেকে দেশান্তরে। চাকরির বাজার যত সঙ্কুচিত হয়েছে, ততই কদর বেড়েছে ষোলো আনা সার্ভিস কালীর। বর্তমানে কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই থেকেও বহু মানুষ চাকরির মনস্কামনা নিয়ে ছুটে আসেন সোনামুখীর ষোলো আনা সার্ভিস কালীর কাছে।
ষোলো আনা সার্ভিস কালীপুজো কমিটির সম্পাদক তন্ময় অধিকারী বলেন, “দেবী জাগ্রত। দেবীর কাছে চাকরি পাওয়া ও ব্যবসায় সমৃদ্ধির মনস্কামনা নিয়ে শুধু এ রাজ্যের মানুষ নয় অন্য রাজ্য থেকেও বহু মানুষ আসেন। দেবী তাঁদের সকলের মনস্কামনা পূরণ করেন এটাই আমাদের বিশ্বাস। মনস্কামনা পূর্ণ হলে তাঁরা ফের মন্দিরে এসে পুজো দিয়ে যান। পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যেও অনেকের মনস্কামনা পূরণ করেছেন দেবী।”
সোনামুখী পুরসভার পুরপ্রধান সন্তোষ মুখোপাধ্যায় বলেন, “সোনামুখী শহরের প্রাচীন কালীপুজোগুলির মধ্যে অন্যতম ষোলো আনা সার্ভিস কালী। নিষ্ঠাভরে পুজো করলে সার্ভিস কালী চাকরি তথা রুজি রোজগারের ব্যবস্থা করে দেন, এমনই জনশ্রুতি রয়েছে সোনামুখী শহরে।’’