নজরে। (বাঁ দিক থেকে) পাড়া ও মানবাজারের জয়ীরা। নিজস্ব চিত্র।
প্রান্তিক মহিলাদের আয়ের দিশা দেখিয়ে রাজ্যের সেরা স্বনির্ভর সঙ্ঘের সম্মান পেল ‘পুরুলিয়া আনন্দময়ী মহিলা স্বনির্ভর সঙ্ঘ সমবায় সমিতি লিমিটেড’। ৩ জানুয়ারি কলকাতার নিউটাউনে ‘সরস মেলা’য় পাড়া ব্লকের সঙ্ঘকে পুরস্কৃত করেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতরের উপ অধিকর্তা সুকুমার বৈদ্য জানান, রাজ্যের ৫৪টি ‘মডেল’ স্বনির্ভর সঙ্ঘের মধ্যে পাড়া ব্লকের সঙ্ঘটি সেরা হয়েছে। পাশাপাশি, ১২ দিনের মেলায় বিক্রির নিরিখে মানবাজার ১-এর ‘ধানাড়া দুর্গাময়ী মহিলা সঙ্ঘ প্রাথমিক বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড’ও পুরস্কার পেয়েছে।
২০১৩-তে পাড়া পঞ্চায়েতের পাথরকুচি, তেঁতুলহিটি, নডিহা, বুলবেড়িয়া, পাতিবাদের মতো বিভিন্ন ‘টোলা’র মহিলাদের এক ছাতার তলায় এনে সঙ্ঘ তৈরির কাজ শুরু করেন সন্ধ্যা কুইরি, তোতা মিত্রদের মতো কয়েকজন। প্রথমে তিরিশ-পঁয়ত্রিশটি দল নিয়ে কাজ শুরু করা সঙ্ঘের আওতায় বর্তমানে আড়াইশোর বেশি দল রয়েছে। সন্ধ্যাদেবীর কথায়, ‘‘যখন কাজ শুরু করেছিলাম, দল গড়ার কাজ সহজ ছিল না। দল বলতে অনেক পরিবারেই বিনোদনের দলের ধারণা ছিল। ঘরের মেয়ে-বউদের স্বনির্ভর দলের সঙ্গে যুক্ত করতে বাড়ির অভিভাবকদের মত পাওয়াও জরুরি ছিল।’’ সন্ধ্যাদেবী জানান, জৈব পদ্ধতিতে চাষ, গরু-ছাগল-হাঁস-মুরগি সমেত বিভিন্ন প্রাণিপালন, পুকুর লিজে নিয়ে মাছ চাষ, নার্সারি গড়ে চারাগাছ বিক্রি, মাশরুম চাষের মতো নানা কাজে জড়িত সঙ্ঘের দলগুলি। গত বছর ‘আনন্দময়ী মহিলা স্বনির্ভর সঙ্ঘ’ জাতীয় স্তরেও পুরস্কৃত হয়েছে।
মানবাজার মহকুমার বিভিন্ন স্বনির্ভর দলের থেকে ডোকরা, বাবুই ঘাস, গালা প্রভৃতি থেকে তৈরি শিল্পসামগ্রী কিনে তা বিক্রি করে ধানাড়ার ‘দুর্গাময়ী মহিলা সঙ্ঘ’। সঙ্ঘের তরফে রাসমণি পাল ও সুজাতা মণ্ডল কলকাতার মেলায় গিয়েছিলেন। সুকুমারবাবু জানান, মেলায় ১ লক্ষ ৭২ হাজার টাকার কেনাকাটা হয়েছে। বিডিও (মানবাজার ১) মোনাজকুমার পাহাড়ি বলেন, ‘‘ধানাড়ার সঙ্ঘটি পরিকাঠামোগত ঘাটতি সত্ত্বেও পুরস্কৃত হয়েছে। তাঁরা যাতে কাজের আরও ভাল পরিবেশ পান, তা দেখা হবে।’’