মন্ত্রীর কাছে স্কুলে পাঁচিল দেওয়ার আর্জি ছাত্রের। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত
স্কুলের নিজস্ব খেলার মাঠের বেশ খানিকটা অংশ ইতিমধ্যেই জবর দখল হয়ে গিয়েছে। ‘দিদির দূত’ হয়ে আসা মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহকে নাগালে পেয়ে মাঠ বাঁচাতে মাঠ ঘেরার আর্জি জানালেন খয়রাশোলের হজরতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। সোমবার হজরতপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে এসেছিলেন চন্দ্রনাথ সিংহ। কর্মসূচির মাঝপথে হজরতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পৌঁছে কী কী সুবিধা অসুবিধা রয়েছে শিক্ষকদের, জিজ্ঞেস করতেই স্কুলের খেলার মাঠ দখলের হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন শিক্ষকেরা।
স্কুল সূত্রের খবর, পড়ুয়াদের খেলার জন্য হজরতপুর বাসস্ট্যান্ড ঘেঁষে প্রায় পাঁচ বিঘে জমি রয়েছে। কিন্তু, ওই জমিকে খেলার মাঠ হিসাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। জমির বেশ কিছুটা দখল হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, খোলা মাঠের দিকে ‘নজর’ আছে অনেকের। উপর লোভ অনেকের । মাঠ বাঁচাতে তা ঘেরা খুব প্রয়োজন। প্রধান শিক্ষক সুনীতকুমার মাল, সহশিক্ষক সুপ্রিয় ধরেরা মন্ত্রীকে বলেন, ‘‘মাঠ ঘেরার আর্জি জানিয়েছি প্রশাসনে। আপনি বিষয়টি দেখুন।’’ শিক্ষকদের আর্জি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন মন্ত্রী। পরে মন্ত্রী বলেন, ‘‘স্কুলের মাঠ দখল আগের সরকারের আমলে হয়েছে। মাঠটির সীমানা মাপ করা হয়েছে। আমরা দেখছি।’’
মন্ত্রীর কাছে এ দিন সীমানা প্রচীরের আর্জি শুনেছেন হজরতপুর পঞ্চায়েতের ভবানীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে। পলপই গ্রামের মন্দিরে পুজো গিয়ে কর্মসূচি শুরু করে মন্ত্রী গিয়েছিলেন অজয় ঘেঁষা ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। পড়ুয়ারা কী চাইছে জানতে চাওয়ায় সত্যজিৎ ঘোষ নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্র স্কুল সীমানা প্রাচীর ঘিরে দেওয়ার আবেদন জানায় মন্ত্রীকে। ওই স্কুল থেকে বেরোনোর সময় নির্দয় রক্ষিত নামে এক টোটোচালক মন্ত্রীকে জানান, হজরতপুর থেকে ভীমগড় প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় তৈরি হওয়া রাস্তা সত্বেও পঞ্চায়েত সমিতি টোল আদায় করছে। গরিব সাধারণ মানুষও ছাড়া পাচ্ছেন না। প্রতিবার যাতায়াতে ১০ টাকা করে টোল দিতে হচ্ছে। সব শুনে মন্ত্রী তাঁকে আশ্বস্ত করেন।
পরে সংবাদমাধ্যমরে কাছে মন্ত্রী জানান, পঞ্চায়েত সমিতি কী শর্তে টোল আদায়ের দরপত্র হেঁকেছিল, তা তিনি দেখবেন। তবে দরপত্র ডাকার সময় যদি টোটো ধরাও থাকে, তাহলেও স্থানীয় চালকদের কাছে মাসিক হিসেবে টাকা ধার্য যাতে করা হয়, তা তিনি দেখবেন।
এ দিনই রামপুরহাট বিধানসভা এলাকার নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ‘দিদির সুরক্ষা কর্মসূচি’ ছিল সাংসদ শতাব্দী রায়ের। এ দিন অবশ্য কোনও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়নি তাঁকে। সরকারি পরিষেবা নিয়ে দাবি উঠেছে। এ দিন বালিয়া গ্রামে কালীমন্দিরে পুজো দিয়ে কর্মসূচি শুরু করেন শতাব্দী। এক প্রতিবন্ধী যুবক একটি ব্যাটারি চালিত ‘ট্রাই সাইকেলের’ আর্জি জানান। পরে নারায়ণপুর উচ্চবিদ্যালয় গেলে পড়ুয়ারা সাংসদের কাছে ভূগর্ভস্থ জল শোধনের যন্ত্র বসানোর দাবি জানায়। শতাব্দী আশ্বাস দিয়েছেন, পড়ুয়াদের আর্জি পূরণ হবে।
নলবাহিত পরিস্রুত পানীয় জল এলাকায় পৌঁছে দেওয়া দাবি জানান নারায়ণপুর আদিবাসীপাড়ার তরুণী সুমিত্রা টুডু। তিনি সাংসদকে জানান, গ্রামের একটি অংশ নলবাহিত পানীয় জলে এলেও তাঁদের পাড়ায় আসে না। গ্রামের বেশ কয়েকজন মহিলা অভিযোগ করেন মাটির বাড়িতে বাস করলেও সরকারি আবাস যোজনার বাড়ি পাননি। শতাব্দী দাবিগুলি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।