বোলপুরে তৃণমূলের বীরভূম জেলা কোর কমিটির বৈঠক। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিতে দলকে শক্ত থাকার বার্তা দিলেন তৃণমূল সাংসদ তথা দলের কোর কমিটির সদস্য শতাব্দী রায়। রবিবার বোলপুরে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটি ও জেলা কমিটির বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, জেলা কমিটির বৈঠকে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে শতাব্দী বলেন, ‘‘মাস্টারমশাই সারা বছর পড়ানোর পরে যদি পরীক্ষার আগে দার্জিলিং বেড়াতে যান, তাতে পরীক্ষার্থীদের ফল খারাপ হয় না। ঠিক সে-ভাবেই আমাদের লড়তে হবে। জেতাটাই শেষ কথা। না জিততে পারলে কোনও পদই থাকবে না। কী ভাবে ভোট করতে হয়, তা আমার থেকে বেশি জানেন আপনারা।’’
বৈঠকের পরে সংবাদমাধ্যমকেও খানিক হেঁয়ালির ছলে শতাব্দী বলেন, ‘‘সব (দলের) ভাল। অনুব্রতকে মিস করছি না কাজের ক্ষেত্রে।’’ এর পরেই সাংসদের ব্যাখ্যা, সংবাদমাধ্যম অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে প্রশ্ন করবে বুঝেই তিনি ‘মজা করে’ এ কথা বললেন। এর ‘উল্টো’ মানে যেন না-করা হয়।
দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শুক্রবার বীরভূমের নেতাদের বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, বৈঠকে মমতা নির্দেশ দেন, কোর কমিটি প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত ব্লকগুলির সঙ্গে বৈঠক করবে। এবং নিয়মিত রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে পদক্ষেপ করবে। নিয়মিত করতে হবে কোর কমিটি ও জেলা কমিটির বৈঠকও। কোর কমিটির সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের সমন্বয়ের জন্য দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও মলয় ঘটক এবং পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে দায়িত্ব দিয়েছেন মমতা।
বোলপুরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে এ দিন কোর কমিটির বৈঠক হয়। জেলার দুই সাংসদ, বিধায়ক সহ কোর কমিটির ন’জন সদস্যের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন নরেন্দ্রনাথও। মূলত জায়গায় জায়গায় দলের গোষ্ঠী কোন্দল কী ভাবে মেটানো যায়, কী ভাবে সংগঠনকে ধরে রাখা যায়, সেই নিয়ে পর্যালোচনা হয়। কোর কমিটিতে জায়গা পাওয়ার তৃণমূল নেতা কাজল শেখের নানুর এলাকায় দলের দ্বন্দ্ব মেটাতে মন্ত্রী, বিধায়কদের বলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এর পরে হয় জেলা কমিটির বৈঠক। সেখানে ব্লক সভাপতি ও অঞ্চল সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন।
দলের দ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে শতাব্দীর দাবি, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে-রকম বলা হচ্ছে, সে-রকম কিছু আমরা তো দেখতে পাচ্ছি না। হয়তো কোনও এক জন বিদ্রোহ, প্রতিবাদ করল, কোনও এক জন কোনও মতামত দিল—এমন তিনটে বিষয় হতে পারে। কিন্তু, এ রকম নয় যে রাস্তায় রাস্তায় ফুটে বেড়াচ্ছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব!” জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীও বলেন, “কোথাও কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।”