—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পুজোর ছুটির মধ্যে জেলাস্তরে পড়ুয়াদের নিয়ে কলা উৎসবের আয়োজন করার নির্দেশ দিয়ে বিতর্কে জড়াল পুরুলিয়া জেলা সর্বশিক্ষা মিশন। আজ, বুধবার দুর্গাপুজোর চতুর্থীর দিন পুরুলিয়া ২ ব্লকের ডায়েট হলে জেলাস্তরের কলা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। অথচ এ দিন থেকেই স্কুলে স্কুলে পুজোর ছুটি পড়ছে। তাই কলা উৎসবে স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে কতটা সাড়া মিলবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শাসক-বিরোধী বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা শিক্ষা আধিকারিক বংশীধর ওঝা বলেন, ‘‘এ নিয়ে যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষই বলবেন।’’
কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষা মন্ত্রকের উদ্যোগে ২০১৫ সাল থেকে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, লোকসঙ্গীত, শাস্ত্রীয় নৃত্য, লোকনৃত্য, দৃশ্যকলা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে পড়ুয়াদের নিয়ে জেলাস্তরে কলা উৎসবের প্রতিযোগিতা হয়ে আসছে। জেলায় সফল প্রতিযোগীদের নিয়ে রাজ্যস্তরে ও জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা হয়। কিন্তু রাজ্য সরকারের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১৮ অক্টোবর থেকে ছুটি পড়ছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পাঠানো ছুটির তালিকাতেও পূজাবকাশ শুরু চতুর্থীর দিন থেকেই। তাহলে চতুর্থীর দিনই কেন এই উৎসবের আয়োজন? প্রশ্ন অনেকের।
পুরুলিয়া ২ ব্লকের গোলামার উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উষ্ণীষমণি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কলা উৎসবের কথা পড়ুয়াদের জানানোও হলেও সাড়া মেলেনি।’’ হুড়ার অর্জুনজোড়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বলময় কুম্ভকার জানান, ছাত্রাবাসের অনেক পড়ুয়াই ওই প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে পারত। কিন্তু ছুটিতে তারা বাড়ি চলে গিয়েছে। বাকি পড়ুয়াদের থেকেও খুব একটা সাড়া পাননি। প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস’-এর জেলা সম্পাদক অভিষেক মিশ্র জানান, পড়ুয়ারা এখন ছুটির মেজাজে। তাই তাদের কাছে সাড়া মেলেনি।
ছাত্র সংগঠনগুলিও সমালোচনায় মুখর। টিএমসিপির জেলা সভাপতি কিরীটী আচার্য ও এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক সুব্রত মাহাতোর দাবি, উৎসবের নির্ঘণ্ট তৈরির আগে পুজোর ছুটির বিষয়টি মাথায় রাখলে অনেক বেশি পড়ুয়া প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে পারত। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির পুরুলিয়া জেলা মুখপাত্র বিকাশ মাহাতো বলেন, ‘‘ছুটিতে পড়ুয়াদের কাছ থেকে এই উৎসবে কতটা সাড়া মিলবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।’’ নিখিলবঙ্গ মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক ব্যোমকেশ দাসের কটাক্ষ, ‘‘একটা উৎসব করতে হবে বলে যদি করা হয়, তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু যদি উদ্দেশ্য হয় যে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের পড়ুয়ারা এই উৎসবে অংশ নিক, তাহলে পুজোর ছুটির মধ্যে দিন ঠিক করা সঙ্গত কি না, অনেকেই এই প্রশ্ন তুলছেন।’’ এসটিইএ-র (অখিলবঙ্গ মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি) জেলা সভাপতি ভূপালচন্দ্র মাহাতোও সময় নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।