gold

পুরনো গয়না বিক্রিতে বিষ্ণুপুরে চালু গুচ্ছ নিয়ম

গয়নার দোকানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২১ ০৫:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

যে কেউ যখন খুশি এ বার সোনা-রুপোর পুরনো গয়না দোকানে বিক্রি করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিল বিষ্ণুপুর মহকুমা পুলিশ প্রশাসন। সে ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে পুরনো গয়না বিক্রি করতে আগ্রহী ক্রেতা ও বিক্রেতাকে। না হলে বিপদে পড়তে পারেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। রবিবার বিষ্ণুপুর ও সোনামুখীতে দু’টি বৈঠকে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের ডেকে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হল।

Advertisement

সম্প্রতি বাঁকুড়া শহরের কাঠজুড়িজাঙায় একটি গয়নার দোকানে ডাকাতি হয়েছে। বিষ্ণুপুর শহরেও একের পর এক সোনার অলঙ্কার চুরির ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্যেই এক ‘ছিনতাইকারীকে’ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে চুরি যাওয়া গয়নাও। পুলিশের দাবি, দুষ্কৃতীরা কোথায়, কী ভাবে পুরনো সোনার গয়না কেনাবেচা করে, সে নিয়ে তথ্য এসেছে তাদের হাতে। তাই স্বর্ণকারদের সতর্ক করতে রবিবার মহকুমা দফতরের সভাকক্ষে স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও পেট্রল পাম্পের মালিকদের নিয়ে বৈঠক করেন বাঁকুড়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) গণেশ বিশ্বাস, এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) কুতুবউদ্দিন খান, বিষ্ণুপুর থানার আইসি শান্তনু মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) বলেন, ‘‘পুলিশ সুপারের নির্দেশে বিভিন্ন থানা এলাকায় আমরা বৈঠক করে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সতর্ক করছি।’’

সূত্রের খবর, বৈঠকে জানানো হয়েছে, গয়নার দোকানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। বিষ্ণুপুর শহরে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ৮৯টি সোনা-রুপোর গয়নার দোকান রয়েছে। তার মধ্যে মাত্র তিনটি দোকানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো আছে। এ বার প্রতিটি গয়নার দোকানেই সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে বলা হয়েছে।

Advertisement

পুরনো গয়না এ বার থেকে কিনতে গেলে বেশ কিছু নিয়ম নীতি মানতে হবে ব্যবসায়ীদের। গয়না বিক্রি করতে এলে অলঙ্কারের পাকা রসিদ থাকতে হবে। যদি না থাকে, তবে গয়না বিক্রেতার পরিচয়পত্র, ঠিকানার প্রমাণপত্র জমা নিতে হবে। গয়নার মূল্য নগদে না দিয়ে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সতর্ক থাকতে হবে। যদিও এ দিন বেশ কিছু স্বর্ণ ব্যবসায়ী নিয়ম মেনেই পুরনো গয়না তাঁরা কেনেন বলে দাবি করেছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) গণেশ বিশ্বাস বলেন, “সোনা-রুপো ব্যবসায়ীদের নিজেদের সুরক্ষা নিজেদের ভাবতে হবে। সন্দেহজনক কিছু মনে হলে পুলিশকে জানাতে হবে। দোকানে ক্রেতাদের ঢোকার পরে অন্তত একবার মাস্ক খুলে চিহ্নিত করতে হবে। উন্নতমানের সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো জরুরি। দোকান নির্জন স্থানে হলে তাঁদের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। দোকানের কর্মচারীদের একটি ফাইল বানানো জরুরি। সম্ভব হলে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন রাখা যেতে পারে।” তবে ব্যবসায়ীদের আবেদন মেনে রাতে পুলিশের টহল বাড়ানো হচ্ছে বলেই আশ্বাস দিয়েছেন আধিকারিকেরা।

বিষ্ণুপুর স্বর্ণ শিল্পী সমিতির সম্পাদক আশিস দে-র আক্ষেপ, ‘‘আমরা এমনিতেই কিছু নিয়ম মেনে পুরনো গয়না কিনি। তবে পুলিশ যা যা বলেছে তা সাধ্যমতো মেনে চলার চেষ্টা করা হবে।’’ তবে কড়াকড়িতে তাঁদের দুপুর ১২টা থেকে ৩টে পর্যন্ত প্রায় জনশূন্য রাস্তার পাশে দোকান খুলে বসতে থাকতে হচ্ছে। এতে তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাঁদের দাবি, কড়াকড়ির মধ্যে সকালে দোকান খোলার অনুমতি দিক প্রশাসন।

একই সঙ্গে পেট্রল পাম্প মালিকদেরও পুলিশ সতর্ক করেছে। তাঁদের জানানো হয়েছে, উপযুক্ত নিরাপত্তা রক্ষী ছাড়া সারারাত পাম্প খুলে রাখা নিরাপদ নয়। যদিও প্রতিটি পাম্পের আশপাশের রাস্তায় পুলিশের টহলদারি রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ দিন পুলিশ আধিকারিকদের মোবাইল নম্বরের সঙ্গে বিষ্ণুপুর ও বাঁকুড়া জেলা পুলিশের কন্ট্রোল রুমের ফোন নম্বর ব্যবসায়ীদের দেওয়া হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement