থমকে: বাঁকুড়া-খাতড়া রাজ্য সড়কে মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
চুরির অপবাদ দিয়ে গভীর রাতে ঘরে ঢুকে এক যুবককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ছিল। অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে নিগৃহীত যুবকের। খাতড়ার ভারদিয়া এলাকার ঘটনা। মঙ্গলবার সকালে কয়েক ঘণ্টা মৃতের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা বাঁকুড়া-খাতড়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে রুজু হয়েছে মামলা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত সানাউল খান (২৪) খাতড়ার ভারদিয়া এলাকার বাসিন্দা। মৃতের দাদা সফিউল খানের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ভারদিয়া এলাকারই বাসিন্দা ইয়াকুৎ আলম ও তাঁর স্ত্রী মঞ্জিলা বিবি-সহ মোট ছ’জন তাঁদের বাড়িতে ঢুকে সানাউলকে চোর অপবাদ দিয়ে মারধর করে। শুক্রবার সানাউল এলাকায় বেরোলে তাঁকে কটূক্তি করা হয়। সানাউল গাড়ির চালক ছিলেন। সফিউলের দাবি, সানাউলের গাড়ির মালিকের কাছেও অভিযুক্তেরা গিয়ে নালিশ করে। গাড়ির মালিক সানাউলকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেন। সফিউলের দাবি, দুপুরে বাড়ি ফিরে গায়ে আগুন দেন সানাউল। জখম অবস্থায় তাঁকে খাতড়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে রেফার করা হয়। সোমবার রাতে বাঁকুড়া মেডিক্যালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় সানাউলের।
এ দিকে, সানাউলের মৃত্যুর খবর আসতেই এলাকাবাসীয় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সানাউলের পরিবার ও স্থানীয় লোকজন ভারদিয়া এলাকায় বাঁকুড়া-খাতড়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। অবরোধকারীদের দাবি, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে। পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার সাফিউলের অভিযোগ পাওয়ার পরেই ইয়াকুৎকে গ্রেফতার করা হয়। পরে খাতড়া আদালত থেকে জামিন পেয়ে যান। বাকি তিন অভিযুক্তও খাতড়া আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন। অভিযুক্ত দুই মহিলা অবশ্য প্রথম থেকেই ফেরার। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, অভিযুক্তদের কেউই গ্রামে নেই। তাঁদের সঙ্গে এ দিন চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
সানাউলের দাদা সাফিউল বলেন, “আমার ভাইকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ওরা মারধর করল। বদনাম রটাল। এই ঘটনায় অসম্মানিত হয়েই ভাই গায়ে আগুন দিয়েছে। আমরা অভিযুক্তদের কড়া শাস্তি চাই।” এসডিপিও (খাতড়া) বিবেক বর্মা বলেন, “ছয় অভিযুক্তের মধ্যে চার জন আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। ওঁদের জামিন খারিজ করার জন্য আদালতে আর্জি জানানো হয়েছে। তদন্ত চলছে।”