village

Village: গ্রামের নাম ‘ভূল’! ‘ভুল’ বানান নিয়ে খোঁচায় অতিষ্ঠ পুরুলিয়ার জনপদ

হাজার চারেক মানুষের বাস ওই গ্রামে। রয়েছে দু’টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চারটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু নামে অস্বস্তি।

Advertisement

সমীরণ পাণ্ডে

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২২ ১২:৫৭
Share:

নাম বদলাতে চান ‘ভূল’ গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রামের নাম ‘ভূল’। ভুল নয়, ঠিকই পড়েছেন। আর এই নাম নিয়েই নিত্য অস্বস্তির কাঁটায় বিদ্ধ পুরুলিয়া এক নম্বর ব্লকের ডিমডিহা গ্রাম পঞ্চায়েতের ‘ভূল’ গ্রামের বাসিন্দারা। এমন নাম নিয়ে পথেঘাটে, অফিস-কাছারিতে নিত্য খোঁচায় বিদ্ধ হয়ে ভূলবাসীর একাংশ চাইছেন গ্রামের নামটাই বদলে ফেলতে।
নামে কী আসে যায়? গোলাপকে যে নামেই ডাকুন...। শেক্সপিয়রের এই উক্তি এর বেশি আর শুনতে নারাজ ‘ভূল’ গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। বরং গ্রামের নাম নিয়ে প্রশ্ন উঠলেই বিরক্তি-ক্ষোভ এমন নানা আবেগের মিশেল ভিড় করছে তাঁদের মুখে। ভাঁজ ফেলছে কপালেও। হাজার চারেকের কিছু বেশি মানুষের বাস পুরুলিয়ার ওই গ্রামে। সেখানে রয়েছে দু’টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চারটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু গ্রামের নাম নিয়ে অস্বস্তি নিয়ে যেন লেগেই রয়েছে।

Advertisement

ওই গ্রামেরই বাসিন্দা জ্ঞানেশ মেহতা। পেশায় শিক্ষক। গ্রামের নাম নিয়ে প্রশ্ন শুনে কিছুটা বিরক্ত হয়েই বললেন, ‘‘গ্রামের নাম নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছি। তখন ১৯৭৩ সাল। আমি রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র ছিলাম তখন। সেখানে আমদের গ্রামের নাম শুনে অনেকে হাসাহাসি করত। এখনও অফিসকাছারিতে গেলে একই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘যদি কোনও ভাবে গ্রামের নামটা বদলে ফেলা যায় ভাল হয়। এমন হলে আমরা প্রস্তাব এনে প্রশাসনের দ্বারস্থ হতে চাই।’’

নাম নিয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যা শোনালেন শঙ্কর মেহতা নামে এক গ্রামবাসী। তিনি বলছেন, ‘‘ভূ- শব্দের অর্থ ধরিত্রী। আর লক্ষ্মী অর্থাৎ পৃথিবী লক্ষ্মীর অধিষ্ঠান আমাদের গ্রামে। ভূ এবং ল— এই দুইয়ে মিলে গ্রামের নাম হয়েছে ‘ভূল’। তবে অনেকের মূল অর্থ জানা নেই। তাই গ্রামের নাম নিয়ে হাসাহাসি করেন।’’

Advertisement

গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি শুনে নামবদলের ‘রাস্তা’ দেখিয়েছেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, ‘‘এই ব্যাপারে সরব হতে হবে গ্রামের বাসিন্দাদেরই। তাঁরা নিজেরা একটি বিকল্প নাম ঠিক করে ‘ভূল’ নামটির পাশে বন্ধনীর মধ্যে সেই নাম লেখা শুরু করুন। এ ছাড়া বিকল্প নাম নিয়ে তাঁরা বিভিন্ন পত্রপত্রিকাতেও প্রচার চালাতে পারেন। এ নিয়ে তাঁদেরই এগিয়ে আসতে হবে। তা হলে পরবর্তী সময়ে প্রশাসন নিশ্চয়ই এ নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে।’’

একই সুর পুরুলিয়া এক নম্বর ব্লকের বিডিও অনিরুদ্ধ ঘোষেরও। তিনি বলছেন, ‘‘গ্রামবাসীরা যদি নাম বদলানোর আবেদন করেন তখন আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।’’

নামেই আসে যায়! নামের এই ‘ভুলভুলাইয়া’ থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছেন ‘ভূল’ গ্রামের বাসিন্দাদের অনেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement