প্রতীকী ছবি।
রাঢ়বঙ্গের দুই জেলা বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ায় আসছেন রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি দল। প্রশাসন সূত্রের খবর, দুই জেলায় ‘নারী অধিকার’ কতটা সুরক্ষিত এবং মহিলাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়াই সফরের মুখ্য উদ্দেশ্য। আগামী সোমবার বাঁকুড়া এবং মঙ্গলবার পুরুলিয়া যাওয়ার কথা কমিশনের। আজ, পূর্ব মেদিনীপুরে যাচ্ছেন কমিশনের প্রতিনিধিরা। তাঁদের নেতৃত্বে থাকছেন কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। লীনা বলেন, ‘‘কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার পরে এই প্রথম আমি বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া যাচ্ছি। বেশ কিছু বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করব।’’
কমিশনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সফরের বিস্তারিত জানানো সম্ভব নয়। তবে প্রতিনিধিরা দুই জেলার সরকারি এবং বেসরকারি কয়েকটি হোমের আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁদের কোনও অভিযোগ রয়েছে কিনা, তা জানতে চাইবেন।’’
স্থির রয়েছে, হোমগুলি ছাড়াও দুই জেলার সংশোধনাগারে বন্দি মহিলাদের সঙ্গেও কথা বলবেন কমিশনের প্রতিনিধিরা। সংশোধনাগারের সুপারদের সঙ্গেও তাঁরা বৈঠক করবেন। খাবার এবং ওষুধের মান নিয়ে সংশোধনাগার এবং হোমের মহিলারা মাঝেমধ্যেই প্রশ্ন তোলেন। এমন কোনও অভিযোগ থাকলে তা সরাসরি কমিশনের আধিকারিকদের কাছে তাঁরা জানাতে পারবেন।
বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া রাজ্যের পশ্চিম অংশের প্রান্ত-জেলা হওয়ায় সেখানকার অনেক ঘটনা প্রকাশ্যে আসে না। এই দাবি করে কমিশনের ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘সম্প্রতি বাঁকুড়ায় একটি ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। ঘর থেকে বেরিয়ে শৌচালয়ের দিকে যাওয়ার সময় এক মহিলাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছিল। বিষয়টি জানাজানি হয়নি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ওই খবর কমিশনের কাছে আসার পরই হস্তক্ষেপ করা হয়। জেলা পুলিশকে চিঠি পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল।’’
সাধারণত ধর্ষণ, খুন এবং ডাইনি সন্দেহে হত্যা, পণ না পেয়ে বধুহত্যা, অ্যাসিড হামলার মতো ঘটনাগুলিতে কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগ দায়ের করে। ওই ঘটনায় প্রশাসনিক পদক্ষেপ সম্পর্কে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রশাসনের থেকে তার জবাবও চাওয়া হয়। বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ায় থেকে কমিশনের কাছে খুব বেশি অভিযোগ আসে না বলেই খবর। যে অভিযোগগুলি আসে, সেগুলির বেশীরভাগই গার্হস্থ্য হিংসা সংক্রান্ত। তবে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রাখার অভিযোগে মহিলাদের মারধরের অভিযোগ প্রায়ই আসে ওই দুই জেলা থেকে।
লীনা বলেন, ‘‘দুই জেলা থেকে আসা অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখার প্রশ্নে প্রশাসনের ভূমিকা খুবই ভাল। রিপোর্ট চাইলে জেলা আধিকারিকেরা তা পাঠিয়ে দেন। দু’-একটি ঘটনায় জেলা প্রশসানের থেকে এখনও রিপোর্ট আসেনি।’’ কমিশনের এক সদস্যা বলেন, ‘‘জেলা পরিদর্শনের সময় অনেক বিষয় কমিশনের সামনে আসে। অনেক সময় সেই বিষয়গুলি সম্পর্কে সরকারের কাছে নির্দিষ্ট সুপারিশ পাঠায় কমিশন।’’