১৬ নভেম্বর থেকে ‘দুয়ারে রেশন’
Duare Ration

Duarey ration: দাবি পূরণ হবে কি, অপেক্ষায় ডিলারেরা

এই প্রকল্প নিয়ে তাঁদের তরফে ইতিমধ্যে যে সব সমস্যা খাদ্য দফতরে জানানো হয়েছে, তা পূরণ না হলে পরিষেবা দিতে পারবেন কি না, সে নিশ্চয়তা নেই বলে ডিলারদের বড় অংশের দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২১ ০৮:০৯
Share:

হয়েছে পাইলট প্রকল্প। ফাইল চিত্র।

সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে চলার পরে, ১৬ নভেম্বর থেকে চালু হচ্ছে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প। জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, সে দিন কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্পের সূচনা করবেন। তবে এই প্রকল্প নিয়ে তাঁদের তরফে ইতিমধ্যে যে সব সমস্যা খাদ্য দফতরে জানানো হয়েছে, তা পূরণ না হলে পরিষেবা দিতে পারবেন কি না, সে নিশ্চয়তা নেই বলে পুরুলিয়ার রেশন ডিলারদের বড় অংশের দাবি।

Advertisement

প্রকল্পের পরীক্ষামূলক পর্যায়ে প্রতিটি ব্লকের দু’টি করে পঞ্চায়েতকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। সংশিষ্ট ব্লকের সদর পঞ্চায়েত ও প্রত্যন্ত একটি করে পঞ্চায়েতে সে কাজ শুরু হয়। পুরসভা এলাকার ক্ষেত্রে দু’টি করে ওয়ার্ড বেছে নেওয়া হয়। পুরুলিয়া জেলা খাদ্য নিয়ামক শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানান, গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ‘পাইলট’ প্রকল্প শুরু হয়। তখন ব্লক পিছু আট জন এবং পুর এলাকায় দু’জন করে রেশন ডিলার এই প্রকল্পে কাজ করেছিলেন। জেলার ২০টি ব্লক ও তিনটি পুর এলাকায় মোট ১৬৬ জন ডিলার কাজ করেন। অক্টোবরের মাঝামাঝি পরিষেবার এলাকা বাড়িয়ে জেলার অর্ধেক রেশন ডিলারকে এই প্রকল্পে যুক্ত করা হয়। মোট ৫৪১ জন সে কাজ শুরু করেন।

‘ওয়েস্ট বেঙ্গল এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর পুরুলিয়া জেলা শাখার সম্পাদক প্রভাশিসলাল সিংহদেও দাবি করেন, ‘পাইলট’ প্রকল্প শুরুর আগে, খাদ্য দফতরের সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হয়। কাজ করতে কী কী সমস্যা হতে পারে, তা জানিয়ে তাঁরা কিছু দাবি রেখেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘ঘুরে-ঘুরে পণ্য পৌঁছে দিতে গিয়ে মালের যে ঘাটতি হচ্ছে, তা পূরণে কুইন্টাল প্রতি দু’কেজি অতিরিক্ত সামগ্রী, কুইন্টাল প্রতি ন্যূনতম ৩০০ টাকা কমিশন, যে সমস্ত ডিলারের গ্রাহক সংখ্যা খুব কম তাঁদের ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকা ভাতা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার দাবি আমরা জানিয়েছিলাম। এ ছাড়া, ই-পিওএস যন্ত্রে এখন গ্রাহকদের বিল দিতে হয়। যেখানে মোবাইলের নেটওয়ার্ক নেই সেখানে ওই যন্ত্র কাজ করে না। এ ধরনের সমস্যা আমরা তুলে ধরেছিলাম।’’

Advertisement

‘বেঙ্গল ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর পুরুলিয়া জেলা শাখার মুখপাত্র নিরঞ্জন মাহাতো বলেন, ‘‘জেলার অনেক এলাকা রয়েছে যেখানে এক-এক জন ডিলারের পরিষেবা দেওয়ার এলাকা তুলনামূলক ভাবে বড়। সে ক্ষেত্রে গাড়ির জ্বালানি পুড়ছে বেশি। পরিবহণ খরচ কতটা পাওয়া যাবে? এ ছাড়া, জঙ্গলমহলে এমন কিছু এলাকা রয়েছে, যেখানে এখনও গাড়ি ঢোকে না। সেখানে জিনিস নিয়ে কী ভাবে পৌঁছনো যাবে? দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে কী ভাবে পরিষেবা দেওয়া যাবে? এ সব প্রশ্ন রয়েছে আমাদের।’’ প্রভাশিসবাবুর দাবি, ‘‘সমস্যাগুলি উপেক্ষা করা হলে এই প্রকল্প আমরা কত দিন চালাতে পারব, নিশ্চয়তা নেই।’’ সে সঙ্গেই তাঁর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বাস্তব সমস্যা বুঝেছেন। তিনি জানিয়েছেন, দুয়ারে না হলেও, পাড়ায় গিয়ে রেশন দিতে হবে। সেটা ডিলার ও গ্রাহক, উভয়ের পক্ষেই সুবিধাজনক।’’

জেলা খাদ্য নিয়ামক অবশ্য বলেন, ‘‘এ রকম কোনও নির্দেশ আমাদের কাছে আসেনি। ইতিমধ্যে আমরা জেলার ১০৮০ জন রেশন ডিলারের মধ্যে অর্ধেককে এই প্রকল্পে যুক্ত করেছি। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরে জেলা জুড়েই কাজ শুরু হয়ে যাবে। প্রস্তুতিতে রেশন ডিলার, ডিস্ট্রিবিউটরদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকও হয়েছে।’’ পুরুলিয়া জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ মনোজ সাহাবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, প্রকল্প চালু হবে। ডিলারদের সমস্যার বিষয়গুলি নিশ্চয় রাজ্য সরকার চিন্তাভাবনা করবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement