১০ নম্বর ওয়ার্ডের বেলতলা পুকুরে ভাসছে কাঠামো। নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুজো, কালীপুজো, জগদ্ধাত্রীপুজো সবই শেষ। এখনও রামপুরহাট পুরসভা এলাকার বেশ কয়েকটি পুকুরে ভাসতে দেখা যাচ্ছে প্রতিমার কাঠামো। সেই সঙ্গে ভাসছে আবর্জনাও। পুকুর সাফের বিষয়ে পুরসভার ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে বিরোধীরা। পুরপ্রধান দ্রুত ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন।
শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, পুরসভার পক্ষ থেকে নিয়মিত পুকুর সংস্কার করা হয় না। এর ফলে পুকুরগুলির আশপাশের এলাকায় বসবাসকারী মানুষজন সমস্যায় পড়েছেন। স্থানীয়রা পুকুরের জলে স্নান, বাসনপত্র ধোয়ার কাজ করে থাকেন। তাঁদের আশঙ্কা, পুকুরের জল কালো হয়ে গিয়েছে। তাই যাঁরা ওই জল ব্যবহার করছেন তাঁদের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ বিষয়টি বেশ কয়েকবার পুরসভাকে জানিয়েও সুরাহা হচ্ছে না। পুরসভার গান্ধীপার্ক, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের একটি পুকুর, লোটাস প্রেসের কাছে একটি পুকুর ছাড়াও বেশ কয়েকটি পুকুরের অবস্থা খুবই খারাপ।
শহরের বাসিন্দা অনুপ দাস, মৈনাক ঘোষরা বলেন, “নিয়মিত পুরসভাকে কর দিয়ে থাকি। পুকুরের অবস্থা যদি এই হয় তাহলে সৌন্দর্যায়ন কী করে করবে পুরসভা? পুরসভা দ্রুত পুকুর সাফ না করলে প্রশাসনের অন্য জায়গায় লিখিত ভাবে জানানো হবে।’’
শহরে পুকুরের এমন দশার জন্য তৃণমূল পরিচালিত পুরসভাকে বিঁধেছে বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মণ বলেন, ‘‘রামপুরহাটে পুরসভা আছে বলে মনে হয় না। সরকারি টাকায় নিজেদের উন্নয়ন কী ভাবে হবে তা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন পুরপ্রধান। পুকুর সংস্কার দূরের কথা শহর জঞ্জালে ভর্তি। পুকুর ভরাট করে বাড়ি হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, পুকুর ও শহর সাফ করা না হলে সিপিএম আন্দোলন শুরু করবে।
একই সুরে সরব হয়েছে বিজেপিও। দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলার মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী রেশমি দে-র কটাক্ষ, ‘‘সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞাস করলেই পুরসভা কী কাজ করছে তার উত্তর পাওয়া যাবে। দুর্নীতির আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে পুরসভা। পুরসভার অধিকাংশ পুকুর ব্যবহারের অযোগ্য হয়েছে উঠেছে।’’
এই অভিযোগ মানতে রাজি হননি পুরপ্রধান সৌমেন ভকত। তিনি বলেন, “দুর্গাপুজো ও ছটপুজোর আগে পুরসভার অধিকাংশ পুকুর সাফ করা হয়েছিল। যে পুকুর ব্যক্তি মালিকানাধীন সেই পুকুর পরিষ্কার করা হয়নি। ছট ও জগদ্ধাত্রী পুজোর কাঠামো থাকতে পারে। দ্রুত পরিষ্কার করা হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় অনেক পুকুরের জল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নজরে আছে।’’
বাসিন্দাদের অনেকেও দূষণের জন্য দায়ী বলে দাবি করেন সৌমেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেকদিন পুরসভার কর্মীরা প্রত্যেক বাড়িতে পৌঁছে যান। তা সত্ত্বেও পলিথিনে ভরে অনেকেই নোংরা ফেলছেন পুকুরে। এই বিষয়ে সচেতন করা হবে। না মানলে জরিমানা করা হবে।’’