প্রতীকী ছবি
আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকটা দিন। ২ জানুয়ারি রাজ্যজুড়ে পালন হবে ‘বই দিবস’। রাজ্য স্কুল শিক্ষা অধিকর্তা দফতর থেকে সেই মর্মে স্কুল গুলিতে এবং মাদ্রাসা গুলিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ অনুযায়ী স্কুল এবং মাদ্রাসা গুলিতে ২ জানুয়ারি নতুন শিক্ষাবর্ষের পাঠ্য বই তুলে দিতে হবে। প্রামাণ্য তথ্য হিসেবে সেই ছবি হোয়াটসঅ্যাপে স্কুল শিক্ষা দফতরে পাঠাতে হবে।
কিন্তু বীরভূমের ত্রিস্তরীয় মাদ্রাসাগুলি ২ জানুয়ারি সরকারি নির্দেশ পালন করবে কি করে তাই নিয়ে উদ্বিগ্ন। এখনও পর্যন্ত ত্রিস্তরীয় মাদ্রাসাগুলিতে পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত একটিও পাঠ্যবই পৌঁছায়নি।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায় জেলাতে মোট ৩১টি মাদ্রাসার মধ্যে ৪টি সিনিয়র মাদ্রাসা (প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি), ২৩টি হাই মাদ্রাসা (পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি) এবং ৪টি জুনিয়র হাই মাদ্রাসা (পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি)। পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক, সাধারণ বিজ্ঞান, শারীরশিক্ষা, আরবি এবং ইসলাম শাস্ত্রের বইগুলি শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে দেওয়ার কথা। একই ভাবে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক ছাড়া জীবন বিজ্ঞান এবং ভৌত বিজ্ঞান, শারীরশিক্ষার পাঠ্য বই এবং নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক এবং শারীরশিক্ষার বই দেওয়ার কথা।
মাদ্রাসাগুলির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত কেউ কোনও বই পায়নি। গত বছরও একই সমস্যায় বই দিবসে নাকাল হয়েছিলেন মাদ্রাসার শিক্ষকেরা। শাসক দল প্রভাবিত ওয়েষ্ট বেঙ্গল মাদ্রাসা শিক্ষক সেলের সভাপতি ফজলে মৌলা খান বলেন, ‘‘বই সরবরাহ করার কথা সরস্বতী প্রেসের। প্রায় ৭০ শতাংশ পাঠ্যবই অধিকাংশ মাদ্রাসায় পৌঁছোয়নি।’’
তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘দু’বছর আগেও সংখ্যালঘু উন্নয়ন আধিকারিক এবং জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিসের মাধ্যমে মাদ্রাসাগুলির বই ঠিকমতো পৌংছে যেত। এখন সেটা হচ্ছে না।’’
অনলাইনে সরস্বতী প্রেসে প্রয়োজনীয় বইয়ের বরাত দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হওয়ার পরে এই সমস্যা বেড়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষকদেরও।
জেলা সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের আধিকারিক শামস তবরেজ আনসারিও বলেন, ‘‘আগে আমাদের দফতরের মাধ্যমে সরকারি বই বিলি হতো। কিন্তু গুদামের অভাবে বই রাখার অসুবিধা হতো। তাই সরকারি ছাপাখানা থেকে সরাসরি বই দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। তবে এ বছর এখনও পর্যন্ত কেন বই পৌঁছোয়নি সে ব্যপারে খোঁজ নিয়ে মাদ্রাসাগুলিতে দ্রুত পাঠ্য বই পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’’