প্রতীকী ছবি।
ট্রেন চালানোর দাবিতে দুই জেলায় বৃহস্পতিবারও অব্যাহত রইল অবস্থান-বিক্ষোভ। সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব নেটিজেনরাও। রেল অবশ্য জানাচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে আদ্রা ডিভিশনে ট্রেন চালাতে তাদের অসুবিধা নেই। লোকাল ট্রেন চালাতে রাজ্য সরকারের অনুমতি চেয়ে চিঠি দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ডিআরএম (আদ্রা) নবীন কুমার।
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সাড়ে সাত মাস পরে, বুধবার থেকে বেশ কিছু লোকাল ট্রেন চালু করা হয়েছে। কিন্তু আদ্রা ডিভিশনে ট্রেন চালানোর অনুমতি না মেলায় অসন্তুষ্ট ট্রেনের নিত্যযাত্রী থেকে রেলের উপরে নানা ভাবে নির্ভরশীল মানুষজন। গত ক’দিন ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অরাজনৈতিক ভাবে আন্দোলন চলছে। রেলের দাবি, করোনা পরিস্থিতিতে লোকাল ট্রেন চালানোর জন্য রাজ্য সরকারের অনুমতি প্রয়োজন। আদ্রার ডিআরএম নবীন কুমার বলেন, ‘‘লোকাল ট্রেন চালানোর জন্য আমরা প্রস্তুত। ইতিমধ্যেই মালগাড়ি ও দুরপাল্লার স্পেশাল ট্রেন আদ্রা ডিভিশনের উপর দিয়ে চলছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে লোকাল ট্রেন চালানোর জন্য রাজ্য সরকারের অনুমতি প্রয়োজন। পুরুলিয়ার জেলাশাসকের মাধ্যমে রাজ্যের অনুমতি চেয়ে আমরা জেলাশাসককে চিঠি দিচ্ছি।”
ডিআরএম জানান, লোকাল ট্রেন চালানোর প্রস্তাব একই সঙ্গে তাঁরা পাঠাচ্ছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সদর দফতরে। রেল সূত্রের খবর, আদ্রা ডিভিশনের সেই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ মহলের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন রেল কর্তৃপক্ষ। তবে এ দিন সন্ধ্যায় পুরুলিয়ার জেলাশাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রেলের তরফে চিঠি পাইনি। চিঠি এলেই তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এ দিন বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ বিষ্ণুপুরের রেলফটকের সামনে শতাধিক মানুষ ট্রেন চালানোর দাবিতে অবস্থান শুরু করেন। ছিলেন রেলের হকার, রিকশাওয়ালা, টোটো ও অটোর মতো স্টেশন এলাকার বিভিন্ন গাড়ির চালকেরা। শামিল হন বিষ্ণুপুরের ক্ষুদ্র ও পাইকারী ব্যবসায়ীরাও।
বিক্ষোভের জেরে বাঁকুড়া-গড়বেতা ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে প্রায় দু’ঘণ্টা যান চলাচল ব্যাহত হয়। বিক্ষোভের জেরে সিগন্যাল না পেয়ে বিষ্ণুপুর স্টেশনে আট মিনিট যশবন্তপুর-কামাখ্যা এক্সপ্রেস থামিয়ে রাখা হয়। আরপিএফ ইন্সপেক্টর (বিষ্ণুপুর) অনিলকুমার সিংহ বলেন, “দুপুর সওয়া ১২টায় সরে যান বিক্ষোভকারীরা। এক বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।”
আদ্রাতেও ট্রেন চালুর দাবিতে শতাধিক বাসিন্দার গণস্বাক্ষর করা স্মারকলিপি এ দিন ডিআরএমের কাছে জমা দেওয়া হয়। একই দাবিতে মিছিল করে পুরুলিয়ার স্টেশন ম্যানেজারের কাছে স্মারকলিপি দেয় পুরুলিয়া শহর তৃণমূল ও যুব তৃণমূল।
আদ্রার বাসিন্দা সাত্যকি দে, সমীরণ কুণ্ডু জানান, লোকাল ট্রেন চালানোর দাবিতে ডিআরএমকে দেওয়া স্মারকলিপিতে সই করেছেন আনাজ বিক্রেতা থেকে শুরু করে দিনমজুর, স্টেশনের হকার থেকে সাধারণ মানুষ। তাঁরা বলেন, ‘‘লোকাল ট্রেনের উপরে বহু মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল। ট্রেন বন্ধ থাকায় রোজগার হারিয়েছেন তাঁরা। এ ছাড়া, সাধারণ মানুষ নানা কাজে কিংবা চিকিৎসায় বাইরে যেতে পারছেন না।’’ একই কথা বলছেন পুরুলিয়া শহর তৃণমূলের সভাপতি বিভাসরঞ্জন দাস। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতার আশেপাশে লোকাল ট্রেন শুরু হলে, এখানে সমস্যা কোথায়?’’