প্রচারে আরপিএফ। নিজস্ব চিত্র
হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে পাথর ছোড়ার ঘটনায় নড়চড়ে বসেছে রেল পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় মালদহের কুমারগঞ্জে হাওড়াগামী বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সি-১৩ কামরার একটি দরজায় পাথর ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। মঙ্গলবারও এনজেপি স্টেশনে ট্রেনের উপর পাথর ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, পাথরের আঘাতে ট্রেেনর দরজা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর পরেই মঙ্গলবার সকাল থেকে সচেতন রেল পুলিশ। বন্দে ভারত ও শতাব্দী এক্সপ্রেস যাওয়ার সময় রেল পুলিশকে লাইনের ধারে টহল দিতে দেখা গেল।
অন্যদিকে, নলহাটি, মুরারই রেল স্টেশন ও রেল লাইন সংলগ্ন এলাকায় সচেতন করতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বললেন রেল পুলিশের আধিকারিকেরা। নলহাটি থানার পাইকরপাড়া এলাকায় রেল পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকে প্রচারও করা হয়। রেল পুলিশের আধিকারিকেরা এদিন বাসিন্দাদের বোঝান, রেল লাইনের পাশে বসে থাকতে দেখা যায় অনেক কম বয়সীকে। তাদের মধ্যে অনেকে বাজি ধরে দ্রুত গতিতে যাওয়া দূরপাল্লার ট্রেনের দরজা বা জানালার কাচ লক্ষ করে লাইনে পড়ে থাকা পাথর ছোড়ে, কেউ আবার শুধুই সরকারী সম্পত্তি নষ্ট করার জন্য। অনেকে রেল লাইনের লোহার পাতের উপর পাথর রেখে দেয়। এই ধরনের আচরণ কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। ধরা পড়লে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। তাই অভিভাবকেরা যেন এই বিষয়ে খেয়াল রাখেন।
কুমারগঞ্জের এই ঘটনা মনে করিয়ে দেয় বছর খানেক আগে মুরারইয়ের ডাঙাপাড়া এলাকায় শতাব্দী এক্সপ্রেসের জানালা লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার ঘটনা। সেই কারণেই রেল পুলিশ তড়িঘড়ি নলহাটি, মুরারই ও রাজগ্রাম এলাকায় সচেতনতার প্রচার চালিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে। রাজগ্রামের বাসিন্দা অচিন্ত্য ঘোষ বলেন, ‘‘এই ট্রেন তো আমাদের রাজ্যের গর্ব। এই ধরনের ঘটনা রাজ্যের জন্য লজ্জাজনক। এটা কোনও সুস্থ মানসিকতার পরিচয় নয়। রেল পুলিশকে কেন সচেতন করতে হবে!’’ মুরারইয়ের সুনীলসাগর দত্তের দাবি, ‘‘বন্দে ভারত ও শতাব্দী এক্সপ্রেস এই দিক দিয়ে যায়। অনেক বারই পাথর ছোড়ার ঘটনা কানে আসে। এই পাশবিক আচরণে ট্রেনের যাত্রীরাও আহত হন। অভিভাবকদেরকেই সচেতন করতে হবে।’’
নলহাটির আরপিএফ আধিকারিক সকলদেব কুমার বলেন, ‘‘এদিন রেল পুলিশের পক্ষ থেকে রেল লাইনের পাশে থাকা বাসিন্দাদের সচেতন করা হয়। তাঁদের এটাও বলা হয়, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের গতিবেগ আরও বাড়বে। সেই জন্য রেল লাইন দিয়ে কেউ পারাপার করবেন না। গৃহপালিত পশুদের রেল লাইনের কাছে আসতে দেবেন না। আর রেলে লাইনের পাথর তুলে ট্রেনে ছোড়ার ঘটনা ঘটলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’