চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
রঘুনাথপুরে ডিভিসি-র তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে জমি দিয়েও অনেকে কাজ পাননি বলে অভিযোগ তুলে কর্মসংস্থানের দাবিতে আন্দোলনে নামল তৃণমূলের ‘জমিহারা কমিটি’। বৃহস্পতিবার কমিটির সদস্য তথা জমিহারারা কাজের দাবিতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের দরজার সামনে বিক্ষোভ অবস্থান করেন।
সূত্রের খবর, ডিভিসি-র এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল রঘুনাথপুর ১, রঘুনাথপুর ২ ও নিতুড়িয়া ব্লকের নতুনডি, নীলডি ও রায়বাঁধ পঞ্চায়েতে। জমিহারাদের মধ্যে যাঁরা তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের নিয়ে ওই কমিটি তৈরি করা হয়েছে। সভাপতি হয়েছেন নীলডির যুব তৃণমূল সম্পাদক বিকাশ বাউরি। সম্পাদক হয়েছেন রায়বাঁধ এলাকার যুব নেতা সোমনাথ গোপ। এ দিন বিক্ষোভ অবস্থানে উপস্থিত ছিলেন রঘুনাথপুর ২ ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি স্বপন মেহেতাও। তিনি বলেন, ‘‘দলগত ভাবেই জমিহারাদের কর্মসংস্থানের দাবিতে আমরা কমিটি গড়ে আন্দোলন শুরু করেছি।’’
কমিটি সূত্রের দাবি, পরবর্তী পর্যায়ে ধাপে ধাপে তারা আন্দোলনের গতি বাড়াবে। কমিটির সভাপতি নীলডি গ্রামের বাসিন্দা বিকাশ বাউরি বলেন, ‘‘এ দিন আমরা জমিহারাদের কাজের দাবিতে প্রতীকী-বিক্ষোভ অবস্থান করেছি। পরের ধাপে ধাপে কর্মসংস্থানের দাবি জানব প্রশাসন ও ডিভিসিকে।” সম্প্রতি স্থানীয় নাড়াগড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা জমিরাহাদের একাংশ কাজের দাবিতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ অবস্থান করেছিলেন। এ বার মাঠে নামল ওই কমিটি।
‘লকডাউন’ পর্বে ভিন্ রাজ্য বা ভিন্ জেলা থেকে কাজ হারিয়ে অনেক জমিরহারা বাড়িতে ফেরার পরেই ডিভিসি-র প্রকল্পে তাঁদের কর্মসংস্থানের দাবি বেশি করে উঠছে। বিকাশবাবুর দাবি, ‘‘জমিহারাদের সকলেই ডিভিসি-র তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কাজ পাননি। তাই অনেকেই বাইরে কাজ করতে গিয়েছিলেন। ‘লকডাউন’-এ তাঁরা বাড়ি ফিরেছেন। এ বার তাঁদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ডিভিসিকেই করতে হবে।”
বিক্ষোভে থাকা নীলডির বাসিন্দা জমিহারাদের মধ্যে পিন্টু বাউরি, রায়বাঁধের বৃন্দাবন গোপেরা বলেন, ‘‘তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে আমাদের পরিবারের জমি গিয়েছিল। কিন্তু কাজ পাইনি বলে বাইরে যেতে হয়েছিল। এখন কাজ হারিয়ে গ্রামে ফিরতে হয়েছে। এই অবস্থায় ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে আমাদের কাজের ব্যবস্থা করতেই হবে।”
জমিহারা কমিটির অভিযোগ, ডিভিসি বহিরাগত শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানোর জন্যই বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা তথা জমিহারারা। বিকাশের দাবি, ‘‘জমি অধিগ্রহণের সময়েই ডিভিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, অদক্ষ ও অর্ধ দক্ষ শ্রমিক হিসাবে জমিহারাদের কর্মসংস্থান করা হবে। বাস্তবে ভিন্ জেলা থেকে শ্রমিকদের নেওয়া হচ্ছে। জমিহারাদের বঞ্চনা করা হচ্ছে।’’
যদিও এই অভিযোগ মানতে চাননি বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। এক আধিকারিক দাবি করেন, ‘‘বিদ্যুৎকেন্দ্রে চাহিদা অনুযায়ী কাজে নিয়োগের ক্ষেত্রে সব সময় জমিহারাদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। সে ভাবে প্রচুর জমিহারা কাজ পেয়েছেন। কিন্তু প্রকল্পে কাজের সুযোগ না থাকলে, নিয়োগ করা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।”