রঘুনাথপুর শহরের জল প্রকল্পের জন্য চুক্তি হল রঘুনাথপুর পুরসভা ও ডিভিসি-র মধ্যে। নিজস্ব চিত্র
‘অম্রুত (অটল মিশন ফর রিজ়ুভিনেশন অ্যান্ড আর্বান ট্রান্সফর্মেশন) ২ প্রকল্প’ রূপায়ণে আরও এক ধাপ এগোল রঘুনাথপুর পুরসভা। দামোদর থেকে জল পেতে ডিভিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে পুরসভার। সোমবার ঝাড়খণ্ডে ডিভিসির জলবিদ্যুৎ প্রকল্প মাইথনের অফিসে চুক্তিপত্রে সই করেন দুই পক্ষ। ছিলেন পুরপ্রধান তরণী বাউরি, জল সরবরাহের দায়িত্বে থাকা পুর-প্রতিনিধি প্রণব দেওঘরিয়া ও অন্য পুর-প্রতিনিধিরা।
তরণী জানান, চুক্তি অনুযায়ী দৈনিক ১.৯৭ মিলিয়ন গ্যালন জল পুরসভা পাবে। পুরপ্রধান বলেন, “প্রায় আশি কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হবে জল প্রকল্পটি। ‘ডিপিআর’ তৈরি করছে নাবার্ড। তাদের কথামতো ডিভিসির সঙ্গে জল ও জমি ব্যবহারের বিষয়ে চুক্তি করা হয়েছে।”
বিস্তর টালবাহানার পরে ‘অম্রুত ২’ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে রঘুনাথপুর পুরসভা। সূত্রের খবর, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পুরসভার জল-সমস্যা পুরোপুরি মেটা শুধু নয়, উদ্বৃত্ত জল রাজ্য সরকার প্রস্তাবিত শিল্পনগরী ‘জঙ্গলসুন্দরী কর্মনগরী’-তে সরবরাহ করে আয়ও করতে পারবে পুরসভা।
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটি রূপায়ণে জলের সংস্থান করতে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। প্রথমে স্থির হয়, রঘুনাথপুর ২ ব্লকে দামোদরের করগালি ঘাট থেকে জল নেওয়া হবে। পুর-প্রতিনিধি প্রণব জানান, করগালি ঘাটের জলের গুণমান পরীক্ষার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল। তবে রিপোর্টে জানা যায়, সেখানকার জলে ন্যাপথা রয়েছে। পরে তাই আরও কিছুটা নিচে নিতুড়িয়ার রায়বাঁধ পঞ্চায়েত এলাকায় দামোদর থেকে জল নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ওই এলাকার জলের গুণমান যথাযথ, এই মর্মে রিপোর্ট আসার পরেই জল পাওয়া নিয়ে ডিভিসির সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুরসভা। পুরসভা সূত্রে খবর, জল ও জমি লিজ নেওয়ার জন্য ২২ লক্ষের বেশি টাকা ডিভিসিকে দিতে হয়েছে। জলের জন্য কম-বেশি ১৫ লক্ষ টাকা এবং পাম্পহাউস, ‘ইনটেক’ তৈরির জন্য ডিভিসির জমি ব্যবহার করতে কম-বেশি সাত লক্ষ টাকা অম্রুত ২ প্রকল্প থেকে দেওয়া হয়েছে।
পুর-আধিকারিকেরা জানান, প্রকল্পের পাইপলাইন রায়বাঁধ, গুনিয়াড়া, চেলিয়ামা, মঙ্গলদা-মৌতোড়, বাবুগ্রাম—এই পাঁচ পঞ্চায়েত এলাকার মধ্য দিয়ে যাবে। ওই পঞ্চায়েতগুলির কাছ থেকে ‘নো-অবজেকশন’ শংসাপত্র নিতে হবে পুরসভাকে। তার পরে চূড়ান্ত ‘ডিপিআর’ তৈরি করে জমা করবে নাবার্ড।
প্রকল্প রূপায়িত হলে শহরে জল-সমস্যা আর থাকবে না জানিয়ে পুরসভার বাস্তুকার বিজয় মণি বলেন, “পুরসভা এলাকায় জলের দৈনিক চাহিদা ০.৫-০.৬ মিলিয়ন গ্যালন। সেখানে দৈনিক জল মিলবে ১.৯৭ মিলিয়ন গ্যালন। আশা করা যায়, আগামী গ্রীষ্মে আর জলকষ্টে ভুগতে হবে না শহরবাসীকে।”