বন্ধ: বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনে বিজ্ঞপ্তি। নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের জেরে বসন্ত উৎসব হয়নি। জমায়েত এড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেওয়া কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের পরামর্শ মেনে সোমবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রবীন্দ্রভবন, শান্তিনিকেতন গৃহ, বাংলাদেশ ভবন সহ অন্য প্রধান দর্শনীয় স্থানগুলিও। বিশ্বভারতীর একটি সূত্রের খবর, এতে দৈনিক ক্ষতির বহর ছুঁয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা।
দৈনন্দিন টিকিট বিক্রির হিসেব অনুযায়ী, সোম থেকে শুক্র পর্যটকদের প্রবেশ মূল্য বাবদ আয়ের অঙ্কটা প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার এবং শনি-রবি তা এক লক্ষ ছাড়িয়ে যায়। এ ছাড়াও রবীন্দ্রভবনের মিউজিয়ামের ভিতর একটি পুস্তক বিপণি কেন্দ্র রয়েছে। সেখানেও বই বিক্রি বাবদ দৈনিক আয়ের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার টাকা। বই বিক্রি ও প্রবেশমূল্য বাবদ প্রাপ্ত টাকা বিশ্বভারতীর খাতেই পৌঁছে যায়। যেখানে গত কয়েক মাসে বারবার বিশ্বভারতীর আর্থিক দুরবস্থার বিষয়টি সামনে এসেছে, সেখানে রবীন্দ্রভবন অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়া অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বিশ্বভারতীর উপরে ধাক্কা বলে মনে করছেন অনেকেই। এই নিয়ে বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
পর্যটক থেকে পড়ুয়া, গবেষকদের আলাদা আগ্রহ রয়েছে রবীন্দ্রভবন নিয়ে। বিচিত্রা বাড়ির উপর এবং নীচের তলার সংগ্রহশালায়, যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রাপ্ত নোবেল-এর প্রতিকৃতি এবং তাঁর অন্য ব্যবহৃত জিনিস রাখা রয়েছে, সেখানেও একই সময়ে বিরাট মানুষের ভিড় হয়। তবে রবীন্দ্রভবনের গ্রন্থাগার পড়ুয়া ও গবেষকদের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি রবীন্দ্রভবন। আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দিনে প্রায় এক লক্ষ টাকা বলে বিশ্বভারতীর একটি সূত্রের দাবি।
রবীন্দ্রভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, রবীন্দ্রভবন তথা সমগ্র বিশ্বভারতীতে সারা বছর পর্যটকের আনাগোনা লেগে থাকলেও, দুর্গাপুজোর কিছু দিন আগে থেকে বসন্ত উৎসবের কিছু দিন পর পর্যন্ত পর্যটকের সংখ্যা তুলনায় অনেক বেশি থাকে। এই সময়ে সোমবার থেকে শুক্রবার-এ কমবেশি দৈনিক গড়ে আড়াই থেকে তিন হাজার দর্শক আসেন। শনি এবং রবিবার এই সংখ্যাটি ছুঁয়ে যায় প্রায় ৫০০০। রবীন্দ্রভবনের প্রবেশ মূল্য বিদেশিদের জন্য ৩০০ টাকা, সাধারণ ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ৫০ টাকা, ছাত্রদের জন্য ১০ টাকা।