বোলপুর ভুবনডাঙায় ফুটপাতে দোকান ভাঙা পড়লেও থেকে গেল তৃণমূল কার্যালয় (পিছনে)। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।
দোকান ভাঙা পড়লেও কেন রাস্তার উপরে থাকা তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় ভাঙা হবে না, সে প্রশ্ন তুলে দু’দিন আগে রামপুরহাটে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল কংগ্রেস। তার পরে পরেই, গত শনিবার বোলপুর শহরে প্রশাসনের উদ্যোগে জামবুনি এলাকায় ভাঙা পড়ে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়। বুধবার অবশ্য দেখা গেল অন্য ছবি। শাসকদলের কার্যালয় অক্ষত রেখে রাস্তার উপরে ভেঙে ফেলা হল বাকি সব ‘অবৈধ’ নির্মাণ। তৃণমূলের কার্যালয় বলেই কি ছাড়— প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। কৃণমূল অভিযোগ মানেনি।
বৃহস্পতিবার থেকে বোলপুর শহর জুড়ে শুরু হয়েছে উচ্ছেদ অভিযান। দখল হয়ে যাওয়া ফুটপাত ও সরকারি জায়গা পুনরুদ্ধারের কাজে নেমেছে পুরসভা। বুধবার বোলপুর থেকে শান্তিনিকেতন রাস্তায় ভুবনডাঙায় পে-লোডার নামিয়ে রাস্তার উপরে থাকা অবৈধ নির্মাণগুলি ভেঙে ফেলা হয়। ওই রাস্তার উপরেই রয়েছে তৃণমূলের কার্যালয়। সরকারি জমি দখল করেই তা তৈরি হয়েছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। কিন্তু, এ দিন সেই কার্যালয় ভাঙা হয়নি।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “ভাঙলে সবই ভাঙতে হবে। দলীয় কার্যালয় বলে ছাড় কেন?’’ তাঁর দাবি, এই উচ্ছেদ সরকারি জায়গা পুনরুদ্ধারের জন্য নয়। শহরে তৃণমূলের ভোটের ফল খারাপ হয়েছে বলে গরিব মানুষদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য উচ্ছেদ চলছে। প্রথম দিন থেকেই তাঁরা এই উচ্ছেদের বিরুদ্ধে। বিজেপির বোলপুর সংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, “এই কাজ বেআইনি। তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় রেখে দিয়ে বাকি সমস্ত কিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে, এটা চলতে পারে না। এর জন্য বোলপুর পুরসভা ও প্রশাসনকে আমরা ধিক্কার জানাই।”
যদিও স্থানীয় তৃণমূলের পুর-প্রতিনিধি তথা ওই দলীয় কার্যালয়ের দায়িত্বে থাকা সুকান্ত হাজরা বলেন, “ইতিমধ্যেই আমরা দলীয় কার্যালয়ের উপরের টিনের ছাউনি থেকে শুরু করে ভিতরের জিনিসপত্র সরাতে শুরু করে দিয়েছি। ফুটপাতের দোকানঘর যখন ভাঙা পড়েছে, কার্যালয়ও ভাঙা পড়বে। বিরোধীদের বলব, রাজনীতি না-করে ফুটপাত দোকানিদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।’’ বোলপুরের পুরপ্রধান পর্ণা ঘোষ বলেন, “দলীয় কার্যালয় হোক বা অন্য নির্মাণ, যা কিছুই সরকারি জায়গা দখল করে থাকবে, সেটাই ভাঙা পড়বে।”