নতুন একটি পাইপ লাইন বসানো নিয়ে প্রশ্ন উঠল পুরুলিয়ায়। শহরের দেশবন্ধু রোডে শুরু হয়েছিল ওই পাইপ লাইন বসানোর কাজ। কিন্তু কোথায় জল নেওয়ার জন্য ওই পাইপলাইন বসছে, তা নিয়ে সব পক্ষই মুখে কুলুপ এঁটেছে। পুরসভার দাবি, তাঁরা এই পাইপ লাইনের ব্যাপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারে। কোথায় জল নেওয়ার জন্য কে বা কারা এই পাইপ লাইন বসাচ্ছে, তা জানতে চেয়ে সোমবার শাসকদলেরই কাউন্সিলর বিভাস দাস পুরসভায় চিঠি দিয়েছেন।
শহরের দেশবন্ধু রোডে পুরুলিয়া-বাঁকুড়া জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে বেশ কিছু দিন ধরে। পাশাপাশি, ওই রাস্তার পাশেই চলছে নিকাশি নালা তৈরির কাজ। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, নিকাশি নালার পাশেই পাইপলাইন পাতার কাজও চলছিল। এক সঙ্গে কাজ চলায় চট করে কারও চোখে পড়েনি। শাসকদলের কাউন্সিলর দেবাশিস চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, রাঘবপুর মোড়ের দিক থেকে বেশ কয়েকশো মিটার পাইপ লাইন পাতা হয়ে গিয়েছে।
এই পাইপলাইন নিয়ে প্রশ্ন বড় হয়ে ওঠার কারণ পুরুলিয়ার চিরকালীন জলের সমস্যা। গ্রীষ্মের গোড়া থেকেই জলের হাহাকার দেখা যায় এই পুরশহরে। বাসিন্দাদের রোজকার প্রয়োজনের জল পর্যাপ্ত পরিমানে দিতে গিয়ে হিমসিম খায় পুরসভা। পুরুলিয়ার তৃণমূল কাউন্সিলর বিভাস দাসের দাবি, পুরপ্রধানকে লেখা চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, পানীয় জলের দাবিতে ওই এলাকার বাসিন্দারা কয়েকদিন আগে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। রাস্তা পর্যন্ত অবরোধ হয়েছে। তাঁর মতে, এই অবস্থায় লুকিয়ে কাউকে জলের সংযোগ দিলে পুরসবার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে। কোথায় জলের সংযোগ দিতে কে বা কারা এই কাজ করছিল তা জানতে চেয়েছেন তিনি। বিভাসবাবু বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবেই এই জলের সংযোগ দেওয়া হচ্ছিল। পুরুলিয়া শহরে এখন তীব্র জলাভাব চলছে। এই সময়ে যদি সবার অগোচরে কারও জন্য পানীয় জলের সংযোগ দেবার ব্যবস্থা হয়, তাহলে নানা মহলে পুরসভার স্বচ্ছতা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে। আর সেটা ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে।’’
ওই এলাকার সিপিএম কাউন্সিলর মিতা চৌধুরী দাবি করেছেন, পাইল লাইন কার জন্য পাতা হচ্ছে সেটা তিনিও জানেন না। তার কথায়, ‘‘আমার এলাকায় আরও কয়েকটি জলের সংযোগের জন্য একাধিকবার আবেদন করেছি। সেই দাবি পূরণ হয়নি। আমি পুরপ্রধানের কাছে জানতে চাইব, তাহলে কার জন্য এই পাইপ লাইন পাতা হচ্ছিল?’’
রবিবার পাইপ লাইন পাতার খবর চাউর হতেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, রাস্তার পাশে পাইপ পড়ে রয়েছে। পুরসভার জলের দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল বৈদ্যনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই রাস্তায় পানীয় জলের কোনও সংযোগ পুরসভার পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে না।’’ পুরপ্রধান সামিমদাদ খান বলেন, ‘‘পুরসভার পক্ষ থেকে বর্তমানে জলের কোনও সংযোগই দেওয়া হচ্ছে না। বিষয়টি পুরসভা তদন্ত করে দেখবে।’’