প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের বেশ কয়েকটি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু করার কথা ঘোষণা করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। সেই ঘোষণা মতো বাঁকুড়া জেলায় চারটি স্কুলে চালু হতে চলেছে ইংরেজি মাধ্যমে পঠনপাঠন। ইতিমধ্যেই স্কুলগুলির পরিকাঠামো খতিয়ে দেখার কাজ সেরে ফেলেছে জেলা স্কুলশিক্ষা দফতর। ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর জন্য কয়েক জন শিক্ষক নিয়োগও করা হয়েছে। যদিও স্কুল বাছাই বা পরিকাঠামোর মতো কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে জেলার শিক্ষক মহলে।
জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পঙ্কজ সরকার জানান, বাঁকুড়ার মধ্যকেন্দুয়াডিহি মাধ্যমিক ইনস্টিটিউশন, কালীমেলা বিদ্যানিকেতন ও নামো আঁচুড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক এবং প্রাক্ প্রাথমিক স্তরে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা চালু হচ্ছে। এ ছাড়া পাত্রসায়রের ভূতুড়া হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণি থেকে ইংরেজি মাধ্যমে পঠনপাঠন চালু করা হচ্ছে। ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে স্কুলগুলিতে। আগামী জানুয়ারি থেকেই পুরোদমে ইংরেজি মাধ্যমে ক্লাসও শুরু হয়ে যাবে। পঙ্কজবাবু বলেন, “মধ্যকেন্দুয়াডিহি মাধ্যমিক ইন্সটিটিউশন, কালীমেলা বিদ্যানিকেতন ও নামো আঁচুড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর জন্য কয়েক জন শিক্ষিকা নিয়োগ করা হয়েছে। পাত্রসায়রের ভূতুড়া হাইস্কুলে বর্তমানে যে শিক্ষকেরা রয়েছেন আপাতত তাঁরাই ইংরেজি মাধ্যমে পড়াবেন। পরে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।”
জেলার শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, বাঁকুড়া জেলা স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু করার দাবি উঠছে দীর্ঘ দিন ধরেই। অথচ ওই স্কুল তালিকায় নেই। বিষ্ণুপুর ও খাতড়া মহকুমা শহরের কোনও স্কুলেও কেন ইংরেজি মাধ্যম চালু করা হল না, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। এবিটিএ-র বাঁকুড়া জেলা সহ-সম্পাদক আশিসকুমার পান্ডে বলেন, “কীসের ভিত্তিতে এই স্কুলগুলি বাছাই করা হল সেটাই বোধগম্য হচ্ছে না। জেলার স্কুলশিক্ষা দফতরের আগে খতিয়ে দেখা দরকার ছিল, কোথায় কোথায় ইংরেজি মাধ্যমের চাহিদা রয়েছে।’’
পঙ্কজবাবুর অবশ্য দাবি, যে সব স্কুলে পড়ুয়ার হার কম মূলত সেখানেই ইংরেজি মাধ্যম চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি গৌতম দাস বলেন, “শহরের কয়েকটি স্কুল পড়ুয়ার অভাবে ধুঁকছে। ইংরেজি মাধ্যম চালু করে সেই সমস্ত স্কুলের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর লক্ষ্যেই জেলা স্কুলশিক্ষা দফতর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
জেলার প্রত্যন্ত এলাকার পড়ুয়াদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনার সুযোগ করে দেওয়ার লক্ষ্যে গত কয়েক বছরে ধাপে ধাপে সাতটি ইংরেজি মাধ্যমের ‘মডেল স্কুল’ গড়া হয়েছে জেলায়। তবে স্কুল গুলিতে যথেষ্ট শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় নানা সমস্যা হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। আবার স্থানীয় পড়ুয়ারা ইংরেজি মাধ্যমে পড়তে এগিয়ে না আসায় ছাত্রছাত্রী টানতে ওন্দা, হিড়বাঁধ ও রানিবাঁধ ব্লকের মডেল স্কুলগুলিতে বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে ইংরেজি মাধ্যম চালু হওয়া এই স্কুলগুলি কতটা সাড়া পাবে, তা নিয়েও জল্পনা চলছে বিভিন্ন মহলে।
আশিসবাবু বলেন, “শুধু ইংরেজি মাধ্যম চালু করলেই হবে না। স্কুলে ভাল শিক্ষক রয়েছেন কি না, অভিভাবকেরা সেই খবরটাই আগে নেবেন।” পঙ্কজবাবুর আশ্বাস, “শীঘ্রই পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ হবে।”