বাবা মাকে হারিয়ে তিন ভাইবোনকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়ে ৬ বছর বয়সি অনিতা। নিজস্ব চিত্র।
স্বামী ছিলেন কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত। ৪ নাবালক সন্তানকে নিয়ে অর্ধসমাপ্ত পাঁচিলের সঙ্গে এক টুকরো ত্রিপল টাঙিয়ে দিনমজুরি করে কোনওমতে সংসার চালাতেন মা। কিন্তু অস্থায়ী সংসারও ভেঙে পড়ল। পুরুলিয়ার হুড়া থানার বিশপুরিয়া গ্রামের বাজারপাড়া এলাকায় চার ভাইবোনের সামনে এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ।
চার মাস আগে মারা যান তাদের বাবা মটক সিং সরদার(৩৬)। এর পর দিন দশেক আগে মৃত্যু হয় তাদের মা লক্ষ্মীরও (২৮)। বাবা মাকে হারিয়ে তিন ভাইবোনকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়ে ৬ বছর বয়সি অনিতা। তার পরের বোন সবিতার বয়স ৪ বছর। ছোট বোন কবিতা ৩ বছরের। সব থেকে ছোট ভাই বুদ্ধেশ্বরের বয়স মাত্র দেড় বছর। আপাতত ওই ত্রিপলের নীচেই দিন গুজরান করছে চার শিশু। এই অঞ্চলের তৃণমূলের যুব সভাপতি বিকাশরঞ্জন কালিন্দীর অভিযোগ, ‘‘অনাথ শিশুগুলির দিকে বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েত কোনও নজর দেয়নি। শিশুদের করুণ অবস্থার কথা স্থানীয় প্রশাসনকে জানানোর পরেও কাজ হয়নি।’’
এই ঘটনার প্রসঙ্গে রখেরা বিশপুরিয়া বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রতিমা টুডু শুক্রবার বলেন,"আমি আজ কার্যালয়ে যাইনি।একটা মিটিংয়ে আছি। পরিবারটিকে সাহায্য করা হবে।"
বুধবার রাতে এই শিশুদের করুণ অবস্থার ছবি-সহ কিছু লাইন সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন বিকাশরঞ্জন। এর পরেই কার্যত ভাইরাল হয় এই ঘটনা। বিকাশরঞ্জনের দাবি, অনেকেই এই শিশুদের সাহায্যের জন্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। বৃহস্পতিবার এই শিশুদের বাড়ি গিয়ে তাদের মায়ের পারলৌকিক কাজের জন্য আর্থিক সাহায্যও করেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূল নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়।সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রসেনজিৎ মাহাতো। তাঁরা ওই শিশুদের হাতে জামাকাপড়, শীতবস্ত্র, খাবার তুলে দেন। পাশাপশি তাদের সরকারি হোমে পাঠানোর জন্য চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানানো হয়।