পানা পরিষ্কারের কাজ শেষের দিকে। — নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুজোর আগেই পানামুক্ত স্বচ্ছ জলের সাহেববাঁধ শহরবাসীকে উপহার দিতে চায় পুরসভা। সেই লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে জোর কদমে সরোবর সাফাইয়ের কাজ চলছে। সংস্থা সূত্রে দাবি,ইতিমধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি কাজ হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা চলছে।
বেশ কয়েক বছর ধরেই পানা জমার সমস্যায় ভুগছে পুরুলিয়া শহরের ‘ফুসফুস’ হিসাবে পরিচিত ৮৫ একরের এই জলাশয়। মাঝেমধ্যে সাফাই করা হলেও কিছু সময় যেতে না যেতে ফের পানায় ঢেকে জলাশয়ের দমবন্ধ অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছিল শহরবাসীর। তাঁদের দাবি, বাঁধের চারদিক রেলিং দিয়ে ঘেরা বা রং করার মতো পদক্ষেপ হলেও আখেরে বাঁধের স্বাস্থ্যের দিকে পুরসভার নজর নেই। বাঁধের বেশির ভাগ অংশ কচুরিপানায় ঢেকে যাওয়ায় জলের গুণগত মান নষ্টের অভিযোগে সরব হন পরিবেশপ্রেমীরাও।
মাস দেড়েক আগে বাঁধ সাফাইয়ের কাজে ঝাড়খণ্ডের রাঁচীর একটি সংস্থাকে নিয়োগ করে পুরসভা। সংস্থার তরফে রাকেশকুমার সিংহ জানান, এই সরোবর নিয়ে পুরুলিয়াবাসীর একটা আবেগ রয়েছে। সেই আবেগকে সম্মান জানিয়ে সুচারু ভাবে সাফাইয়ের কাজ চলছে। সংস্থার কর্মীদের অভিজ্ঞতা, বাঁধের জলে কচুরিপানার একাধিক স্তর রয়েছে। উপরের অংশ সাফাই করা হলে আপাত ভাবে জলের উপরিভাগ পরিষ্কার দেখাবে। তবে জলের নীচে পানার স্তর থেকে গেলে তা থেকে কিছু দিনের মধ্যে গোটা জলাশয় ফের কচুরিপানায়ঢেকে যাবে।
রাকেশের কথায়, “সরোবরের বিভিন্ন জায়গায় পানার স্তর খতিয়ে দেখার পরে একেবারে নীচ থেকে সাফাইয়ের কাজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি, যন্ত্রের সহায়তায় সরোবরের মাঝ অংশ থেকে কচুরিপানা টেনে তোলা হচ্ছে। কাজ করতে গিয়ে আমাদের বেশ কয়েক জন শ্রমিকের ভাঙা কাচে পা কেটেছে। শহরবাসীর কাছে আমাদের আবেদন, জলাশয়ে ভাঙা কাচ ফেলবেন না।” কচুরিপানা সাফাইয়ের পাশাপাশি জলের গুণগত মানেরও উন্নতি ঘটানো বলে দাবি করেছে সংস্থাটি। রাকেশ বলেন, “শুনেছি এক সময়ে এই সরোবরের জল এতই স্বচ্ছ ছিল যে নীচের অনেকটা অংশ দেখা যেত। আমরা সেই স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনারও চেষ্টা করব।”
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক নয়ন মুখোপাধ্যায় বলেন, “সাহেববাঁধের কচুরিপানা সাফাইয়ের কাজ চলছে। এ পর্যন্ত যতটা কাজ হয়েছে, দেখে তো ভালই মনে হচ্ছে। রোদ পড়লে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়বে। যেটা আশার কথা।”
পুরুলিয়া পুরসভার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালির কথায়, “পুজোর আগেই আমরা কচুরিপানামুক্ত সাহেববাঁধ শহরবাসীকে ফিরিয়ে দেব। সে লক্ষ্যেই কাজ করছেবিশেষজ্ঞ সংস্থা।”