শুরু: রাঁচী রোডে। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরুলিয়া শহরের জলের সমস্যা কাটাতে টাকা ও জলের গাড়ি বরাদ্দ করার পরেই পুরসভায় তৎপরতা শুরু হয়েছে। জলের উৎস অনুসন্ধানে খড়গপুর আইআইটি-র সাহায্য চাওয়া হল। জল বহনকারী ট্যাঙ্কের বরাতও দেওয়া হল।
পুরুলিয়া পুরএলাকার পানীয় জলের সমস্যা সমাধানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাম্প্রতিক জেলা সফরে মফস্সল থানার বেলকুঁড়ির প্রশাসনিক সভা থেকে ৫২ লক্ষ টাকা ও ৫০টি ট্যাঙ্ক বরাদ্দ করেছেন। বরাদ্দ করেই তিনি পুরসভাকে দ্রুত পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন।
বস্তুত পুরুলিয়া পুরএলাকার এখনও বহু ওয়ার্ডে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। চৈত্রমাসেই শহরে পানীয় জলের জন্য হাহাকার শুরু হয়ে গিয়েছে। পুরসভায় জলের জন্য যেমন লোকজন এসে দাবি জানাচ্ছেন, জল চেয়ে দীর্ঘক্ষণ জাতীয় সড়ক আটকে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। দিন দিন আড়েবহরে এই শহরে জনবসতি যেমন বাড়ছে, তেমনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পানীয় জলের চাহিদাও। পুরকর্তৃপক্ষের কাছে সমস্যার কথা শুনেই মুখ্যমন্ত্রী পানীয় জলের জন্য বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেন। মুখ্যমন্ত্রী ওই সভায় জানান, পুরুলিয়া শহরের পানীয় জলের বরাদ্দ দৈনিক ৪৫ লক্ষ লিটার থেকে বাড়িয়ে ৮৫ লক্ষ লিটার করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন...
জাপানে পাড়ি দেবে স্বপ্নসন্ধানী শ্যামল
পুরুলিয়ার তৃণমূল পুরপ্রধান সামিমদাদ খান বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের দ্রুত এই কাজে নামতে নির্দেশ দিয়েছে। তাই এ বার গরমকালে কী ভাবে জলের সঙ্কট মোকাবিলা করা হবে, তার একটা প্রাথমিক রূপরেখা আমরা তৈরি করে ফেলেছি। ঠিক হয়েছে, কংসাবতী নদীর গর্ভ থেকে তোলা জল যেমন শহরের বিভিন্ন এলাকায় পাইপলাইনে সরবরাহ করা হয় তা তো হবেই। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় গভীর নলকূপ বসিয়ে জল তুলে ট্যাঙ্কে ভরে তা শহরের সমস্যা থাকা এলাকায় পাঠানো হবে।’’ পুরপ্রধান জানান, শহরের অধিকাংশ জায়গায় মাটির নীচে জল নেই। এমনও হয়েছে, কয়েকশো ফুট খুঁড়েও জলের নাগাল পাওয়া যায়নি। তাই মাটির নীচে ঠিক কোথায় জলের উৎস রয়েছে, তা খুঁজতে পুরসভা খড়গপুর আইআইটির বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিচ্ছে। তাঁরা এসে পরীক্ষা করে জানিয়ে দেবেন, শহরের কোন কোন জায়গায় জলের ভাণ্ডার রয়েছে। সেখানেই পুরসভা গভীর নলকূপ খনন করে জল তুলে বাড়তি চাহিদা মেটাতে চাইছে। যে সব ওয়ার্ডে জলের অভাব রয়েছে, সেই ওয়ার্ডগুলিতেই গভীর নলকূপ খোঁড়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। ইতিমধ্যেই খড়গপুর আইআইটির কাছে পুরুলিয়া পুরসভা সাহায্য চেয়ে খবর পাঠিয়েছে।
জল সরবরাহের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল বৈদ্যনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘আইআইটির বিশেষজ্ঞেরা আগে কয়েকটি উৎস চিহ্নিত করে গিয়েছিলেন। ধবঘাটা, রাঁচী রোড, দমকল কেন্দ্রের পিছনে তিনটি গভীর নলকূপ খোঁড়া হয়েছে।’’
জলের পাঠানোর জন্য পুরসভার কাছে বর্তমানে ২০টি ট্যাঙ্ক রয়েছে। আরও ৫০টি ট্যাঙ্ক মুখ্যমন্ত্রী দিচ্ছেন। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘এই ট্যাঙ্কগুলি খুবই কাজে লাগবে। এতদিন অনেকে জল চাইলে ট্যাঙ্কের অভাবে তা দেওয়া যেত না। ট্যাঙ্ক রাখার যথেষ্ট জায়গাও আমাদের রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো, এ বার থেকে শহর লাগোয়া গ্রামগুলিতেও উৎসব-অনুষ্ঠানে মানুষ চাইলে পুরসভা জলের গাড়ি পাঠাবে।’’ বৈদ্যনাথবাবু জানান, তাঁরা নতুন ট্যাঙ্কের বরাতও দিয়ে ফেলেছেন।