জল বিক্রি বেড়েছে শহরে। রাঁচী রোডে। ছবি: সুজিত মাহাতো।
শহরের জলের প্রধান উৎস কংসাবতী থেকে নির্বিচারে বালি তুলে নেওয়াতেই জলাভাবের কবলে পড়েছে পুরুলিয়া শহর, মত বিশেষজ্ঞদের। তবে তেলেডি, শিমূলিয়া ও ডাবর-বলরামপুরে নদীর যে তিনটি ঘাটের পাম্পিং স্টেশন থেকে শহরে পানীয় জল সরবরাহ হয়, সেখান থেকে রাতারাতি বালির স্তর উধাও হয়ে যায়নি বলে দাবি শহরবাসীর একাংশের। ধীরে ধীরে বালি সরানোর ফলে এই পরিস্থিতি হয়েছে। তবে জেলা পুলিশের দাবি, গত কয়েক মাস ধরে নদী থেকে বালি তোলা বন্ধ রয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলা রুখতে জেলা জুড়ে টাস্কফোর্স গড়া হয়েছে। নিয়মিত টাস্কফোর্সের অভিযান চলছে।”
পুরসভার পানীয় জল সরবরাহ বিভাগের এক আধিকারিক জানান, গত কয়েক মাস ধরে অবৈধ বালি তোলা রুখতে পুলিশি নজরদারি চালালেও তার আগেই তেলেডি ঘাটের উপরের দিক থেকে প্রচুর বালি উঠে গিয়েছে। শিমূলিয়া ঘাটের আশপাশ থেকে বস্তাবন্দি হয়ে সাইকেলে বালি উধাও হওয়ার ঘটনাও অনেকে জানেন। অথচ বালির স্তরে সঞ্চিত জল পুরুলিয়ায় এই সময়ের ভরসা। পরিস্থিতি এতই খারাপ যে, বাড়ি বাড়ি জল দেওয়া এক দিন করে বন্ধ রাখতে হচ্ছে। পাড়ায় জল দেওয়া চালু রয়েছে।
জেলা পরিষদের কো-মেন্টর জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বালির স্তর তো এক দিনে নদী থেকে উধাও হয়ে যায়নি। পানীয় জলের প্রকল্প রয়েছে যে ঘাটগুলিতে এবং বিধি মোতাবেক ওই ঘাটগুলির যতটা এলাকা থেকে বালি তোলা যায় না, সেখান থেকেও বালি তোলা হয়েছে। নিজে প্রশাসনিক বৈঠকে প্রসঙ্গটা তুলে সতর্ক করেছি। তবে তত দিনে ক্ষতি যা হওয়ার, তার অনেকটা হয়ে গিয়েছে।” তিনি জানান, গত কয়েক মাস ধরে বালি তোলা বন্ধ করেছে পুলিশ। এই নজরদারি বজায় না রাখলে অদূর ভবিষ্যতে ভরা গ্রীষ্মে পানীয় জলটুকুও মিলবে না। জেলা পুলিশ সুপার জানান, তিনি দায়িত্বে আসার পরে থেকে প্রায় সব ঘাট থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলা বন্ধ করা হয়েছে। জেলার চারটি মহকুমায় ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিকের নেতৃত্বে চারটি টাস্কফোর্সও গড়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে আরও খবর, শহর লাগোয়া কংসাবতী নদীতে যেখানে পানীয় জলের প্রকল্প রয়েছে, সেই ঘাটগুলিতে সিভিক ভলান্টিয়ারদের মোতায়েন করা হয়েছে।