বান্দোয়ানের সুপুডি গ্রামে চলছে একশো দিনের পুকুর খনন। নিজস্ব চিত্র
‘লকডাউন’-এর পরে কেটেছে প্রায় দু’মাস। করোনা-আতঙ্ক ঝেড়ে ফেলে জীবন কবে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে, তা জানা নেই কারও। কিন্তু উন্নয়নের কাজ তো অনির্দিষ্টকালের জন্য থেমে থাকতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধির কথা মাথায় রেখে উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়েছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে চলতি মাসের মধ্যে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে ১০ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে, এমনটাই দাবি প্রশাসনের।
উন্নয়নের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা করা ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পকেই পাখির চোখ করতে হবে বলে ইতিমধ্যেই জেলার সব ব্লক ও মহকুমা প্রশাসনকে জানিয়েছেন জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। গত ১৬ মে বিডিও ও মহকুমাশাসকদের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করেন তিনি।
সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে জেলাশাসক জানিয়ে দেন, করোনা-পরিস্থিতিতে সতর্কতা অবলম্বন করে ফের কাজ শুরু করতে হবে। ‘মাটির সৃষ্টি’ বা গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পারে এমন প্রকল্পগুলির উপরে জোর দিতে বলা হয়েছে বৈঠকে।
‘লকডাউন’ জারি হওয়ার পরে থমকে ছিল একশো দিনের কাজের প্রকল্প। এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহের শেষ দিকে ফের শুরু হয়েছে প্রকল্পের কাজ। জেলাশাসক জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পে ৯ লক্ষের বেশি শ্রমদিবস সৃষ্টি করা গিয়েছে।
‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পের অনেক কাজেই একশো দিনের কাজের প্রকল্পকে ব্যবহার করে করা যেতে পারে। অন্য রাজ্য বা জেলা থেকে যাঁরা পুরুলিয়া ফিরছেন, তাঁদের ১০০ দিনের কাজে যুক্ত করার কথা ভাবছে প্রশাসন। যাঁদের জব-কার্ড নেই, তাঁদের ওই কার্ডের জন্য আবেদন করতে বলা হবে।
একশো দিনের কাজের প্রকল্পের নোডাল অফিসার সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় জানান, চলতি মাসের মধ্যে ১০ লক্ষ শ্রমদিবস সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের দাবি, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে গত আর্থিক বছরে রাজ্যে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে পুরুলিয়া। ২০১৯-’২০ আর্থিক বছরে যেখানে রাজ্যের কাজের গড় ছিল ৪৯.৮৮ দিন, সেখানে পুরুলিয়ার গড় ছিল ৫৭.৬৮ দিন। তার আগের আর্থিক বছরে (২০১৮-’১৯) এই প্রকল্পে জেলার ১ লক্ষ ৩১ হাজার পরিবারকে কাজ দেওয়া গিয়েছিল। ২০১৯-’২০ আর্থিক বর্ষে জেলার ২ লক্ষ ৩ হাজার ৬৮৮ পরিবারকে কাজ দেওয়া হয়েছে।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় যাঁরা রয়েছেন বা যাঁরা আসতে পারেন, তাঁদের ওই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসার বিষয়টিও দেখতে বলা হয়েছে।’’