পুরুলিয়ার কৃষি ভবন। নিজস্ব চিত্র
যে ভবনের উদ্বোধন করতে এসেছেন, তার কোনও পরিকল্পনা দেওয়া হয়নি দফতরের মন্ত্রীকেই! বুধবার পুরুলিয়ায় জেলা কৃষি দফতরের নবনির্মিত ভবনে এসে এই ঘটনার উল্লেখ করে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু।
এ দিন দুপুরে পুরুলিয়া শহরের নর্থ লেক রোডে নতুন কৃষি ভবনে প্রশাসনিক কাজের সূচনা অনুষ্ঠান ছিল। গত ৬ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ভবনের উদ্বোধন করেন। এ দিন কৃষিমন্ত্রী উদ্বোধন পর্ব সেরে বক্তৃতার মাঝেই নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি আশা করেছিলাম, এই ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একটা পুস্তিকা দেওয়া হবে। তাতে ভবনের পুরো পরিকল্পনা উল্লেখ থাকবে। কতটা জমির উপরে এই ভবন তৈরি হয়েছে, এখানে কী কী সুবিধে পাওয়া যাবে ইত্যাদি থাকবে। দুঃখের বিষয়, এই ভবনের পরিকল্পনার বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না! আমাকে কোনও ব্লু-প্রিন্ট দেখানো হয়নি।’’ এখানেই না থেমে মন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘প্রথমেই একটা খুঁত থেকে গেল।’’
খোদ মন্ত্রীর এ কথায় জেলা কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা অস্বস্তিতে পড়ে যান। পূর্ণেন্দুবাবু এখানেই থামেননি। বলেন, ‘‘আমার কাছে এই ভবনের পরিকল্পনার বিষয়টি আগে এলে সমন্বয়ের কথা ভাবা যেত। কেননা আমাদের লক্ষ্যই কৃষি সংক্রান্ত বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয়। এটা আধিকারিকদের ত্রুটি।’’ তবে, সমালোচনার পাশাপাশি মন্ত্রীর প্রশংসাও পেয়েছে কৃষি আধিকারিকেরা। পূর্ণেন্দুবাবুর কথায়, ‘‘এখানকার আধিকারিকদের গুণ আছে। কৃষির উন্নতিতে তাঁরা প্রচুর কাজও করছেন।’’ তাঁর পরামর্শ, প্রতি ব্লক থেকে দশ থেকে কুড়ি জন কৃষককে এনে এই ভবন দেখানো হোক। কেননা এই ভবন তাঁদের। কেবলমাত্র আধিকারিকদের জন্য নয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো বলেন, ‘‘এত সুন্দর ভবন যখন হয়েছে, ভাল করে কাজও করতে হবে। আগে শুনতাম জল পড়ছে, অফিসে জায়গা নেই ইত্যাদি। আর কোনও অজুহাত শুনব না।’’
মন্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা কৃষি দফতরের কর্তাদের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় মানছেন, কৃষি আধিকারিকদের উচিত ছিল বিষয়টি মন্ত্রীকে জানানো।