মদের ঠেকে ভাঙচুরের পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।
বেআইনি মদের ঠেক ভাঙতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন প্রতিবাদী মহিলারা। ঘটনা হুড়া ব্লকের নূতনডি গ্রামে। অভিযোগ, ওই গ্রামে একটি অবৈধ মদের ঠেক চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা এলাকার অবৈধ্য মদের ঠেকগুলি উচ্ছেদের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই সরব। এই ধরনের কিছু ঠেকে এলাকার তাঁরা একাধিকবার অভিযানও চালিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘ঠেক যাঁরা চালান তাঁরা এতটাই বেপরোয়া যে পুলিশ ঠেকে গিয়ে মদের বোতল ভেঙে দিয়ে এলেও পরের দিন থেকেই ফের ঠেক চলতে শুরু করে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবারই এই ঠেকে অভিযান চালায় হুড়া থানার পুলিশ। পুলিশের অভিযানের পরের দিন থেকেই ফের ঠেক চলতে শুরু করায় ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকার নূতনডি ও লাগোয়া বুধুডি গ্রামের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা রবিবার বিকেলে অভিযান চালান। মহিলাদের দাবি, ‘‘ফের মদ বিক্রি শুরু হযেছে এই খবর পেয়ে সেখানে যেতেই ঠেকের মালিক আষাঢ়ী মাহাতো আমাদের আক্রমণ করেন।’’ অভিযোগ, মহিলাদের মারধরও করা হয়। গোষ্ঠীর সদস্য সমলা মাহাতো বলেন, ‘‘লাঠি দিয়ে ওই ঠেকের মালিক আমাকে হাতে ও পায়ে মেরেছে। আরও কয়েকজন মহিলার গায়ে হাত পড়তেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এলাকার মহিলারা। ঠেক ভাঙতে গিয়ে আমারা আক্রান্ত শুনে প্রতিবাদী মহিলারা এসে যোগ দেন।’’
এরপরই দুটি গ্রাম থেকে প্রচুর মহিলা ওই ঠেকে গিয়ে ভাঙচুর চালান। এলাকার বাসিন্দা দীপালি মাহাতো, অষ্টমী মাহাতো, পারুল মাহাতো, সরস্বতী মাহাতো প্রমুখের অভিযোগ, ‘‘ঠেক চালানোর প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমরা আক্রান্ত হয়েছি। এক মহিলার হাত ভেঙে গিয়েছে মার খেয়ে। বুঝতে পারছি না কার বা কাদের প্রশ্রয়ে এভাবে পুলিশ ঠেকে গিয়ে মদের বোতল ভাঙচুর করার পরেও ঠেক চলছে!’’
যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সেই আষাঢ়ী মাহাতোকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তাঁর স্ত্রী করুণা মাহাতো বলেন, ‘‘শুধু শুধু আমার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। উনি বসেছিলেন, অকারণে ওকে মারধর করা হয়েছে।’’ তাঁর স্বামীই যে প্রতিবাদী মহিলাদেরই মারধর করেছেন বলে অভিযোগ সে কথার জবাব এড়িয়ে তিনি জানান, মহিলারা এসেই তাঁদের ঘরদোর ভেঙে দিয়েছে।
নূতনডি গ্রামে যে ঠেকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, সেই ঠেকটির অবস্থান হুড়া ব্লকের জবড়রা গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে। তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান শ্রাবণী মণ্ডল বলেন, ‘‘এখানে একটি অবৈধ মদের ঠেক চলছিল। এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা তা উচ্ছেদ করেছেন। এমন ঠেক সাধারণত, গোপনে চলে। আমরা জানতে পেরেই পুলিশকে জানিয়েছিলাম। পুলিশ এসে ঠেকে অভিযান চালিয়েছিল।’’
পুলিশ জানিয়েছে, খবর পেয়ে ওই ঠেকে শনিবারই অভিযান চালানো হয়। রবিবারের ঘটনা সম্পর্কে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।