বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিদায়ের পর বিশ্বভারতীতে দ্বিতীয় বার উপাচার্য পদে বদল। —ফাইল চিত্র।
বিশ্বভারতীর উপাচার্য পদে আবার বদল। নতুন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হচ্ছেন পল্লি সংগঠন বিভাগের অধ্যক্ষ অরবিন্দ মণ্ডল। উপাচার্য পদে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মাস ছয়েক সেই দায়িত্ব সামলেছেন কলাভবনের অধ্যক্ষ সঞ্জয়কুমার মল্লিক। অধ্যক্ষ পদে তাঁর মেয়াদ শেষ হয়েছে। তার ফলে বিশ্বভারতীর নিজস্ব সংবিধান অনুযায়ী তিনি আর কর্মসমিতির সদস্য নন। তাই উপাচার্য পদেও আর থাকতে পারবেন না সঞ্জয়।
বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধানের ৩(৬) ধারা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকার স্থানীয় উপাচার্য নিয়োগ না করা পর্যন্ত কর্মসমিতির সবচেয়ে প্রবীণ সদস্যকেই সাধারণত ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ বার অরবিন্দ সেই দায়িত্ব পেলেন। এই মর্মে ইতিমধ্যেই একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো।
প্রাক্তন স্থায়ী উপাচার্য বিদ্যুতের সঙ্গে রাজ্য সরকার, শাসকদল তৃণমূল, বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী, ছাত্রছাত্রী, কর্মী ও অধ্যাপকদের একাংশের বিরোধ চরমে উঠেছিল। গত বছর ৮ নভেম্বর তাঁর মেয়াদ ফুরোনোর পরে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়ে ধাপে ধাপে বিশ্বভারতীর পুরনো বিভিন্ন রীতি ফিরিয়ে আনতে এবং প্রাক্তনী, আশ্রমিকদের অসন্তোষ মেটাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন সঞ্জয়। বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, সেই বিরোধ অনেকটা মিটেওছে। কিন্তু এরই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের দাবি তুলেছিলেন ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে কর্মী-শিক্ষকদের বড় অংশ।
গত বছর সেই আবহে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের জন্য সন্ধান শুরু করে দিয়েছিল কেন্দ্র গঠিত সার্চ কমিটি। এর আগে বিশ্বভারতীর কর্মসমিতির বৈঠকে অনুসন্ধান কমিটির সদস্য হিসেবে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা কুমুদ শর্মার নাম মনোনীত করা হয়। তবে, তিনি সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ বলে বিশ্বভারতীর অন্দরেই অনেকে অভিযোগ তুলেছিলেন। বিতর্কও হয় তা নিয়ে। প্রসঙ্গত, সার্চ কমিটির দু’জন সদস্য কর্মসমিতি ও সংসদ দ্বারা মনোনীত হন। তৃতীয় জন রাষ্ট্রপতি বা বিশ্বভারতী পরিদর্শক দ্বারা মনোনীত হন। বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, লোকসভা ভোটের আবহে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়া থমকে গিয়েছে। তার ফলে বিদ্যুৎ-বিদায়ের ছ’মাস পরেও তা সম্ভব হল না।