পুরুলিয়ায় নথি সংগ্রহ। নিজস্ব চিত্র
২০১৪ সালে ‘টেট’ উত্তীর্ণ হয়ে পুরুলিয়ায় প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা পদে নিযুক্তদের সমস্ত নথি তলব করল রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৬ জুন পর্ষদের তরফে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে চিঠি দেওয়া হয়। সিবিআইয়ের একটি মামলার প্রেক্ষিতে ওই নথিপত্র চাওয়া হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে। বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদেরও এই নথিপত্র তৈরি রাখার নির্দেশ দিয়েছে পর্ষদ।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা যায়, যাঁদের নিয়োগ করা হয়েছিল, তাঁদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার, জয়েনিং লেটার, মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফল, ডিএলএড-এর ফল ও শংসাপত্র, টেটের অ্যাডমিট কার্ড ও ফল, জাতিগত শংসাপত্র এবং বদলির শংসাপত্র (যদি থাকে)— এই নথিগুলি চাওয়া হয়েছে। ২০১৪ সালে ‘টেট’-এর বিজ্ঞপ্তি জারির পরে, ২০১৫ সালে পরীক্ষা হয়। ফল বেরোয় ২০১৬ সালে। সে বছরই অক্টোবরে সফল পরীক্ষার্থীদের ইন্টারভিউ হয়। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিয়োগ শুরু হয়।
নিয়োগ শুরুর পরেই, পুরুলিয়ায় সংরক্ষণ বিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের সামনে আন্দোলন শুরু হয়। তার জেরে টানা পাঁচ দিন দফতরের গেট খোলা যায়নি। অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাসের পরে, আন্দোলন ওঠে। ঝামেলা এড়াতে সে সময় প্রার্থীদের ফোনে ‘কাউন্সেলিং’ করা হয়। ২০২০ সালে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারির পরে, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ থাকা ২০১৪-র টেট-উত্তীর্ণ অনেকে নিয়োগপত্র পান।
পুরুলিয়ার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রের খবর, ওই দু’দফায় জেলায় যত শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ হয়েছে, তাঁদের সমস্ত নথি সংগ্রহ শুরু হয়েছে। নির্দেশ পাওয়ার পরে, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতরে একটি ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠক হয়। সেখানে জেলার ৪৫টি চক্রের স্কুল পরিদর্শককে দ্রুত সমস্ত নথি দফতরে জমা দিতে বলা হয়। সে জন্য বৃহস্পতিবার জেলা দফতরে বিশেষ ‘সেল’ খোলা হয়েছে। সেখানে নথি জমা দিয়ে বেরিয়ে কেন্দা চক্রের স্কুল পরিদর্শন দীপ্তেশ মণ্ডল, হুড়া ৩ চক্রের স্কুল পরিদর্শক বিকাশ মাহাতো বলেন, ‘‘নির্দেশমতো নথি জমা দিলাম।’’
পুরুলিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি তথা বিধায়ক রাজীবলোচন সরেন বলেন, ‘‘রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নির্দেশ পেয়ে, স্কুল পরিদর্শকদের ওই সব নথি জমা দিতে বলেছি। সংগ্রহ হয়ে গেলেই রাজ্যে পাঠানো হবে।’’ বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের এক কর্তা বলেন, ‘‘জেলায় ২০১৭ সালে টেট উত্তীর্ণ দেড় হাজারের বেশি প্রার্থী নিযুক্ত হন। রাজ্যের নির্দেশে, তাঁদের তথ্য সংগ্রহ করে রাখা হচ্ছে।’’ নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় আদালতের নির্দেশে বাঁকুড়ায় ইতিমধ্যে ১১ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি গিয়েছে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।