বোলপুরের স্কুলে। নিজস্ব চিত্র।
ধীরে ধীরে বাজার, হাট থেকে শুরু করে শপিং মল, রেস্তোরাঁ সিনেমা হল সব কিছুই খুলে গিয়েছে। এক মাত্র বন্ধ ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। পঠন-পাঠন শিকেয় উঠছিল বহু ছাত্র-ছাত্রীর। সেই অচলাবস্থা কাটিয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্যের সব ধরনের স্কুল খোলার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরুর কথাও জানিয়েছেন। তার পর থেকেই জেলার স্কুলগুলি খোলার ব্যাপারেও কর্তৃপক্ষ নানা পরিকল্পনা নিতে শুরু করেছেন।
একাধিক স্কুলের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, কোথাও করোনা সংক্রমণকে মাথায় রেখে একটি বেঞ্চে দু’জন পড়ুয়াকে বসিয়ে ক্লাস করানো, কোথাও থার্মাল স্ক্রিনিং, স্যানিটাইজার এবং সচেতনতার মধ্যে দিয়ে সংক্রমণ কাটিয়ে নতুন করে আবার পঠন-পাঠন শুরু করার চিন্তা ভাবনা করছে স্কুলগুলি। স্কুল খুললে পড়ুয়াদের মাস্ক পরাও বাধ্যতামূলক করা হবে। শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণার পরে শহর লাগোয়া বেশ কিছু স্কুল ঝাড়া, মোছা থেকে শুরু করে ক্লাসরুমগুলি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু করে দিয়েছে।
সিউড়ির বীরভূম জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন সাহা বলছেন, “অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস চললেও অফলাইনের বিকল্প হতে পারে না। সামনে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা রয়েছে। তাই তাদের কথা ভেবে স্কুল খোলার সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই। স্বাস্থ্য বিধি মনেই স্কুল খোলার সমস্ত ধরনের ব্যাবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” রজতপুর ইন্দ্রনারায়ণ বিদ্যাপীঠ স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপ নারায়ণ দত্ত বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণের কারণে সব থেকে বেশি সমস্যায় গ্রামের পড়ুয়ারা। কারণ, অনলাইনে ক্লাস চললেও অনেকেই সে ভাবে সক্রিয় হতে পারেনি। স্কুল খোলার সিদ্ধান্তে আমরা খুশি। সেই মতো সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’’ একই কথা জানিয়েছেন বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় সাধু।
অনেকেই মনে করছেন ফাইনাল পরীক্ষার আগে পড়ুয়ারা হাতে কলমে প্র্যাকটিক্যাল সহ বিভিন্ন ক্লাস করার সুযোগ পেলে বিশেষ উপকৃত হবে। একই সঙ্গে স্কুল খুললে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য মক টেস্ট নেওয়ারও চিন্তাভাবনা করছে বেশ কিছু স্কুল। তাতে
পরীক্ষার্থীদের মনবল আরও বাড়বে বলেই মত শিক্ষকদের। স্কুলের পাশাপাশি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যাপারেও খুব তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে রাজ্য সরকার।