শান্তিনিকেতনের রতনপল্লিতে আশ্রমিক সঙ্ঘের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র।
আশ্রম চত্বরের বাইরে ব্যক্তিগত পরিসরেই পালিত হল আশ্রমিক সঙ্ঘের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান। পৌষ উৎসবের নির্ঘণ্ট অনুযায়ী প্রতি বছর ৭ পৌষ বিকেল ৩টেয় শান্তিনিকেতন আশ্রমিক সঙ্ঘের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান হয়। রীতি মেনেই নির্ধারিত সময়ে শান্তিনিকেতন রতনপল্লিতে চিকিৎসক অরবিন্দ কোনারের বাড়ির সামনের খোলা স্থানে পালিত হল স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান।
প্রতি বছর এই অনুষ্ঠান আশ্রমের ভিতরে আম্রকুঞ্জে আয়োজিত হয়ে এলেও এই বছর কর্তৃপক্ষের শর্তের কারণে তাঁদের পিছিয়ে আসতে হয়েছে বলে আশ্রমিক সঙ্ঘের সদস্যদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, পৌষ উৎসব থেকে এক প্রকার সরিয়ে দেওয়া হয়েছে আশ্রমিক সঙ্ঘকে। উৎসব আয়োজনের জন্য চাওয়া হয়েছে মোটা অঙ্কের অর্থও। তাঁদের দাবি, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পৌষ উৎসব আয়োজন সংক্রান্ত বৈঠকে সঙ্ঘের সভাপতিকে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়, আম্রকুঞ্জের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের দোতলায় স্মৃতিচারণের অনুষ্ঠান করতে হবে। হলভাড়া ও গাড়ি ভাড়া বাবদ মোট ৫০০০ টাকা দিতে হবে।
আশ্রমিক সঙ্ঘের সদস্য সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘এই অপমানজনক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সঙঘ কর্তৃপক্ষকে জানায়, তাদের লাইট, মাইক ইত্যাদি ব্যবস্থাপনার কোনও প্রয়োজন নেই। আশ্রমের যে কোনও জায়গায় অনাড়ম্বর ভাবে তারা স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানটি করতে ইচ্ছুক।’’ সঙ্ঘের অভিযোগ, এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য জানান, আশ্রমের যে কোনও জায়গায় অনুষ্ঠান করতে গেলেই টাকা দিতে হবে।
ভাড়া দিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সঙ্ঘ সিদ্ধান্ত নেয়, বিশ্বভারতীর জমির বাইরে কোনও ব্যক্তিগত পরিসরেই স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান করবেন। সেই মতোই প্রাক্তন ছাত্রী রিনি কোনার ও তাঁর স্বামী অরবিন্দ কোনারের বাড়িতেই অনুষ্ঠান হয়। স্মৃতিচারণ করেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ছাত্রী তথা পাঠভবনের প্রাক্তন শিক্ষিকা উমা সেন। তিনি তাঁর শান্তিনিকেতনের স্মৃতি এবং বিশ্বভারতীর প্রথম কর্মসচিব হিসেবে দাদামশাই নিশিকান্ত সেনের স্মৃতিচারণ করেন। প্রাক্তনীদের তরফে সঙ্গীত পরিবেশনও করা হয়। বর্তমানে পরিবর্তিত শান্তিনিকেতন সম্পর্কে দুঃখ প্রকাশ করেন উপস্থিত সকলেই।