শিখর ছোঁয়ার সম্মান সুভাষকে

পুরস্কারের সঙ্গে ঘরে ফিরছে স্মৃতি

এভারেস্ট ছোঁয়া ছিল তাঁর স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণ হলে জীবনের অভাব মিটবে বলেই আশা ছিল বাঁকুড়ার যুবক সুভাষ পালের। স্বপ্নপুরণ হয়েছিল, তবে জীবনের বিনিময়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share:

এভারেস্ট ছোঁয়া ছিল তাঁর স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণ হলে জীবনের অভাব মিটবে বলেই আশা ছিল বাঁকুড়ার যুবক সুভাষ পালের। স্বপ্নপুরণ হয়েছিল, তবে জীবনের বিনিময়ে। রাজ্য যুব কল্যাণ দফতরের ‘রাধানাথ শিকদার - তেনজিং নোরগে অ্যাডভেঞ্চার অ্যাওয়ার্ড, ২০১৬’ পেলেন সুভাষ। বুধবার রাজ্য যুব দফতর আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাঁর হয়ে পুরস্কার নিয়ে ফেরার পথে আক্ষেপ ঝরে পড়ল সুভাষের স্ত্রী বিশাখাদেবী ও দাদা প্রণব পালের গলায়। কলকাতা থেকে ফেরার পথে প্রণববাবু বলেন, “এই দিনটার জন্যই কত কষ্ট করেছে ছেলেটা। কিন্তু আজ ও নিজেই নেই।’’ বিশাখাদেবী বলেন, “ও বেঁচে থাকলে আজ আমার চেয়ে খুশি হয়ত কেউ হতো না। কিন্তু এখন আমার ও আমার মেয়ের জীবন সম্পূর্ণ অন্ধকারে। যে এভারেস্ট ওকে এই খ্যাতি দিচ্ছে সেই এভারেস্টই আমাদের সর্বনাশের জন্য দায়ী, এটাই শুধু বারবার মনে হচ্ছে।”

Advertisement

গত মে মাসে এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে আর ফিরে আসতে পারেননি সুভাষবাবু। শিখর ছোঁয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল। প্রথম বাঁকুড়াবাসী হিসেবে এই সাফল্য পাওয়ার পরে ঘরের ছেলের ঘরে না ফেরার শোক সুভাষের পরিবারের বাইরেও জেলার মানুষজনের মধ্যে ছড়িয়ে গিয়েছিল। সুভাষবাবুর বছর বারোর মেয়ে সুশ্রিতা বলে, “বাবার নাম এখন সব জায়গায়। বাবার জন্য আমার স্কুলের শিক্ষক থেকে বান্ধবী— সবাই আমাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়। বাবাকে প্রায় দিনই রাতে স্বপ্নে দেখি। খোলা চোখে কোনও দিনই তো আর দেখতে পাব না।”

ভাইকে পাহাড়ে চড়ার হাতেখড়ি দিয়েছিলেন প্রণববাবু। সুভাষের প্রেরণা ছিলেন তিনিই। এভারেস্ট যাওয়ার পথে অর্থ যখন বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল সুভাষের সামনে প্রণববাবুও পথে নেমেছিলেন টাকার জোগাড় করতে। এখনও তাঁর চিন্তা টাকার টানাটানি নিয়ে। প্রণববাবু বলেন, ‘‘মেয়েটাকে নিয়ে এখন লড়াই করে যাচ্ছে বৌমা। ওর আয়ের একটা সংস্থান হলে পরিবারটা অন্তত বাঁচে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement