ডোমের মৃত্যু, মর্গে কাজ বন্ধ পাঁচ দিন

হাসপাতাল সূত্রের খবর, বোলপুর মহকুমার অন্তর্গত ইলামবাজার থানা, নানুর থানা, বোলপুর থানা,  শান্তিনিকেতন থানা,  শান্তিনিকেতন মহিলা থানা, লাভপুর থানা সহ মোট  ছ’টি থানার যাবতীয় ময়নাতদন্ত করা হয়ে থাকে এই মর্গ থেকে।

Advertisement

বাসুদেব ঘোষ

বোলপুর শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৯ ০১:৫৬
Share:

তালাবন্ধ মর্গ। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালের মর্গে ডোম না থাকায়, পাঁচ দিন ধরে ময়না-তদন্তের কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের আবাসনে মৃত্যু হয় মহেন্দ্র ডোমের। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ওই হাসপাতালে ময়নাতদন্তের কাজ করে আসছিলেন, তাঁকে সহযোগিতা করতেন তাঁর ছেলে বিজয় ডোম। কিন্তু মর্গে আর কোনও ডোম না থাকায় গত শনিবার থেকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গে কোন কাজকর্ম হচ্ছে না। সমস্যায় পড়ছেন অস্বাভাবিকভাবে মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের লোকজনেরা।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রের খবর, বোলপুর মহকুমার অন্তর্গত ইলামবাজার থানা, নানুর থানা, বোলপুর থানা, শান্তিনিকেতন থানা, শান্তিনিকেতন মহিলা থানা, লাভপুর থানা সহ মোট ছ’টি থানার যাবতীয় ময়নাতদন্ত করা হয়ে থাকে এই মর্গ থেকে। প্রতিদিনই গড়ে এই হাসপাতালে দু’একটি মৃতদেহ নিয়ে আসা হয় ময়না তদন্তের জন্য। সেই সমস্ত ময়না তদন্তের কাজ এতদিন একজন ডোম ও তাঁর ছেলে মিলে সামলাতেন, কিন্তু গত শুক্রবার থেকে পাঁচ দিন ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে মর্গে ময়নাতদন্তের কাজ। পাঁচ দিন হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত কোনও বিকল্প ব্যবস্থা করে তুলতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মৃতদেহ ময়না তদন্ত না করেই বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে তা ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে অন্যত্র। বুধবারও ময়নাতদন্ত না করে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হয় দু’টি মৃতদেহ।

শুক্রবার বোলপুর লায়েক পাড়ার কাছে পানা পুকুরে জলে ডুবে মৃত্যু হয় সমর মল্লিক ওরফে রাজু নামে এক ব্যক্তির। মঙ্গলবার রাতেই তাঁর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে আনা হয়। অন্যদিকে কীর্ণাহারের বাসিন্দা উৎপল মুখোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে বুধবার। তাঁর মৃতদেহও ময়নাতদন্তের জন্য বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে আনা হয়, কিন্তু হাসপাতালে কোন ডোম না থাকায় বুধবার সকালে মৃতদেহ দু’টির একটি বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও একটি সিউড়ি সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের একজন ডোমকে দিয়ে যেমন এতদিন ময়নাতদন্তের কাজ করানো হতো একই অবস্থা সিউড়ি সদর হাসপাতালেরও। সেখানেও উত্তম দলুই নামে একজন ডোম রয়েছেন , তাঁকে সহযোগিতা করে তাঁর ছেলে মুন্না দোলুই। বর্তমানে এই দুই হাসপাতালে মর্গে

ডোমের সংখ্যা কম থাকায় ময়না তদন্ত করতে যেমন সময় লাগছে তেমনি তাঁরা অসুস্থ হলে ময়নাতদন্তের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। মহকুমা হাসপাতালে দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপার তীর্থঙ্কর চন্দ্র বলেন, ‘‘মর্গে ডোম না থাকায় ময়নাতদন্তের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি।’’ মহকুমাশাসক অভ্র অধিকারী জানান, বিষয়টি জেলাশাসককে জানানো হয়েছে। দ্রুত সমাধান করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement